
না, নেই। গ্রামবাংলার দিকে তাকালে ছবিটা শিউরে ওঠার মতোই। বেশিরভাগ স্কুলপড়ুয়া লকডাউনেই এই দীর্ঘ বিরতিতে লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে ফেলেছে। পেটের দায়ে কেউ গেছে কাজ খুঁজতে, কেউ আবার বসেছে বিয়ে করে। এক মাথা সিঁদুর, শাখা-পলা হাতে স্কুলের ছাত্রীকে যেন চেনাই যাচ্ছে না আর। টেস্ট পরীক্ষায় ক্লাসরুম পড়ে আছে ফাঁকা, শুনশান।
বাধ্য হয়েই পরীক্ষার আগে পড়ুয়াদের খুঁজতে বেরিয়েছেন শিক্ষকরা। মালদহের এক স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলের ‘ফার্স্ট গার্ল’কে খুঁজতে গিয়ে চমকে উঠেছেন। যে ছাত্রী নিয়মিত স্কুলে প্রথম হত, সেই ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। পাত্র? স্কুলেরই আরেক ছাত্র, সেই ছাত্রীরই সহপাঠী সে। ফার্স্ট গার্ল এখন ঘোমটা মাথায় দেওয়া নতুন বউ হয়ে বসে আছে। পড়াশোনার পাট চুকে গেছে অনেকদিন।
ওই ছাত্রীকে দেখে হতভম্ব হয়ে গেছেন শিক্ষকরা। অনেক বলে কয়ে বর-বউ দুজনকেই পরীক্ষার বসতে রাজি করিয়েছেন তাঁরা। টেস্ট পরীক্ষা দেবে দুজনই। কিন্তু ভবিষ্যৎ কী? প্রশ্ন উঠেছে।
দুজনেই নাবালক। কীভাবে আইনের চোখ এড়িয়ে তাঁদের বিয়ে হল? মালদহের এই ঘটনা নানা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সম্প্রতি এদেশে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স বাড়িয়ে ছেলেদের সমান করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে তার প্রভাব পড়ছে কই? সেখানে এখনও ছোট্ট মেয়ের গলাতেই মালা দিচ্ছে ছোট্ট ছোট্ট ছেলেরা। কড়াভাবে এই নাবালিকা বিয়ের রেওয়াজ বন্ধ না করলে আগামীদিনে অন্ধকার ভবিষ্যৎ দেখছেন শিক্ষকরা।