Latest News

সন্তানকে ২৪ ঘণ্টা আগলে রাখল মা-সারমেয়

দ্য ওয়াল ব্যুরো, আলিপুরদুয়ার: সন্তানের প্রতি স্নেহের ব্যাপারে সব জননীই বোধহয় সমান, তা মানুষ হোন বা পশু হোক। দুর্ঘটনায নিহত শাবককে চব্বিশ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আগলে রাখল এক পথের কুকুর। আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের ভুটান লাগোয়া তুরতুরি কলোনির বাসিন্দারা রইেন সেই দৃশ্যের সাক্ষী।

বর্ষবরণের পিকনিক করতে যাওয়ার সময় বেপরোয়া বাইক একটি দু’মাস বয়সের কুকুরের শাবককে ধাক্কা দিয়ে যায়। পথেই মারা যায় কুকুরটি। কিন্তু সন্তানস্নেহে পাগল মা-কুকুর দীর্ঘ চব্বিশ ঘণ্টা আগলে রইল মৃত সন্তানকে। এই দৃশ্য দেখে কার্যত হতবাক তুরতুরি কলোনি এলাকার মানুষজন।

রাতেও সন্তানকে আগলে মা-সারমেয়

এলাকার জনৈক অনন্ত বর্মনের বাড়ির সামনে বাইকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ওই শাবকটির। মা পথের নেড়ি কুকুর। তার চিৎকারেই বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ ওই মৃত কুকুরের বাচ্চাটি নজরে আসে স্থানীয়দের কিন্তু কেউ তেমন গা করেনি। দুপুর গড়িয়ে রাত হলেও সন্তানের দেহ আগলে কান্নাকাটি করতে থাকে মা-কুকুরটি। তখনও লোকজনের মধ্যে কোনও হেলদোল ছিল না। রাত গড়িয়ে সকালেও একই দৃশ্য দেখে এলকার লোকজন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারটা নাগাদ মৃত কুকুরের বাচ্চাটিকে রাস্তা থেকে তুলে কবর দিয়ে দেন। তার পর রাস্তার সেই জায়গা ছেড়ে দেয় মা নেড়ি।

স্থানীয় বাসিন্দা অনন্ত বর্মন বলেন, “চব্বিশ ঘণ্টা সন্তানের মৃতদেহ আগলে কান্নাকাটি করছিল মা-কুকুরটি। তার তিনটি বাচ্চা — একটি মাদি বা মেয়ে ও দুটি মদ্দা বা ছেলে। মেয়েটি মারা গেছে বাইকের ধাক্কায়। আমরা বাইকটিকে চিহ্নিত করতে পারিনি। বাইকটিকে চিহ্নিত করতে পারলে ওই বাইক চালকের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া যেত। মা-কুকুরটির মমতা দেখে পুরো গ্রামের লোক অবাক হয়ে গেছেন।”

সরকারি হাসপাতালের পশুচিকিৎসক দীপক বার বলেন , “এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। কুকুরের স্নেহশীলতা খুব প্রবল, প্রায় মানুষের মতো, সেই কুকুর পোশা হোক বা পথের। বুদ্ধিও প্রায় মানুষেরই মতো। সেই কারণেই সন্তানস্নেহে এভাবে চব্বিশ ঘন্টা নিজের মৃত সন্তানের দেহ আগলে রেখেছিল নেড়ি। দেখা যাবে কয়েকদিন যেকোনও গাড়ি দেখলেই তাড়া করবে শোকে কাতর ওই মা-কুকুরটি।”

You might also like