Latest News

ফ্রি ভ্যাকসিনঃ মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজকে পোস্টার লাগাতে বলে বিতর্কে ইউজিসি

দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কর্মসূচি নিয়েও রাজনীতি! ইউজিসির সাম্প্রতিক নির্দেশ ঘিরে এমনই অভিযোগ উঠল। দেশবাসীকে বিনামূল্যে কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়ায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়,  কলেজকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ দিয়ে পোস্টার লাগাতে বলল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তারা রবিবার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ইমেল পাঠিয়ে বলেছে, ভারত সরকার ১৮ বছর ও তার বেশি বয়সি সবার জন্য আগামীকাল থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান স্কিম শুরু করছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলিকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে তার হোর্ডিং বা ব্যানার লাগাতে আবেদন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয়  তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রক অনুমোদিত হিন্দি, ইংরেজি হোর্ডিং, ব্যানারের ডিজাইনও পাঠানো হয়। সেই ক্রিয়েটিভে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী, আপনাকে ধন্যবাদ, হিন্দি ও ইংরেজিতে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একাধিক কলেজ এই মেল পাওয়ার কথা জানিয়েছে। যদিও এব্যাপারে ইউজিসি সচিব রাজেশ জৈন সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি।

গত ৭ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বড় ঘোষণা করেন, কেন্দ্র এবার ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও সরবরাহের দায়িত্ব নিচ্ছে। কেন্দ্র স্থানীয় স্তরে মেলা ৭৫ শতাংশ ভ্যাকসিন কিনে নেবে, বাকিটা সংরক্ষিত থাকবে বেসরকারি হাসপাতালগুলির জন্য। ৭৫ শতাংশ ভ্যাকসিনের খরচও পুুরোটা কেন্দ্র বহন করবে।

ঘটনাচক্রে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ নিয়ন্ত্রণ করে ইউজিসি। তাদের এহেন উদ্যোগে শিক্ষা মহলের প্রশ্ন, এটা কি ইউজিসির মোদী সরকারের সুনজরে থাকার চেষ্টা। যদিও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সাউথ ক্যাম্পাসের বাইরে ব্যানার লাগিয়েছে। রেজিস্ট্রার বিকাশ গুপ্তা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁঁরা কোনও ইমেল পাননি ইউজিসির। নিজেরাই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা ছড়াতে ব্যানার দিয়েছেন। জামিয়া মিলিয়ার রেজিস্ট্রার নাজিম  হুসেন  আল-জাফরি জানিয়েছেন, তাঁরা কালকের মধ্যে ব্যানার, পোস্টার ছাপিয়ে ক্যাম্পাসের নানা জায়গায় লাগাবেন। তবে এর পিছনে রাজনীতির ছক দেখতে পাচ্ছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। এমনই একজনের বক্তব্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে যখন খরচ সামলাতে লড়তে হচ্ছে, আমাদের জার্নাল ছাপার অর্থ নেই, ল্যাবরেটরির যন্ত্রাংশ নেই, তখন ইউজিসি বলছে পোস্টার মারতে। এর কী প্রয়োজন? সরকারের এজেন্ডা পালন করা তো বিশ্ববিদ্যালয়,  কলেজের কাজ নয়। এদিকে খোদ ইউজিসির ওয়েবসাইটে এমন একটি পোস্টার রয়েছে। তাতে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে বলা হয়েছে, সবার জন্য নিখরচায় ভ্যাকসিন।

 

এর আগে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে লিখিত ভাবে বলেছিল, যুবসমাজকেও কোভিড ১৯ বিরোধী যুদ্ধে সামিল করা হোক।

তারা বলেছিল, কোভিড ১৯ এর ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুবসমাজকে সক্রিয় পরিবর্তনকারী হিসাবে সামিল করতে ইউজিসি ক্রীড়া,  শিক্ষা,যুব, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক ও নানা স্বেচ্ছাসেবী গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। সব উপাচার্য, কলেজ প্রিন্সিপালকে আবেদন করে তারা বলেছিল,  ১৮ থেকে ৩০ বছরের ছেলেমেয়েদের উত্সাহ দিতে হবে যাতে তারা নিজেদের, তাঁদের পরিবার, সম্প্রদায়,দেশকে বাঁচানোর আন্দোলনে সামিল হয়।

তবে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম থাকা নিয়ে কিছুদিন আগে সরব হন এরাজ্যের বিরোধীরা। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার অভিযোগ এনেছিল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

 

 

 

 

 

You might also like