
এমন সময়েই ফোন। বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নম্বর থেকে ফোন। “আপনাদের রোগী ভাল হয়ে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি পৌঁছে যাবেন!” ফোনে একথা শুনে থ ছেলে। যে বাবা কোভিডে মারা গিয়েছেন বলে জানানো হল, দূর থেকে দেখানো হল দেহ, তাহলে তিনি কে?
শোক বিহ্বল পরিবারে তখন অদ্ভুত এক পরিস্থিতি। কেউ বাঁধ ভাঙা আনন্দে কাঁদছেন আবার কেউ অপেক্ষা করছেন অ্যাম্বুলেন্স আসার। বিশ্বাস করতে চইছেন না। মিনিট ৪০ পরেই এল সেই মুহূর্ত! অ্যাম্বুলেন্স এসে দাঁড়াল বাড়ির সামনে। নেমে এলেন বছর ৫৫-র শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাদে তাঁরই শ্রাদ্ধের প্যান্ডেল, ঘরে তিনি। শোকের বাড়িতে তখন হইহই কাণ্ড।
১১ নভেম্বর শিবনাথবাবুকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। ১৩ নভেম্বর হাসপাতালের তরফে শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারে জানানো হয় তাঁর মৃত্যু সংবাদ।
শিবনাথবাবু তো বাড়ি ফিরলেন। কিন্তু যাঁর দেহ শিবনাথবাবুর ছেলে দেখে এসেছিলেন, যাঁর সৎকার করেছিল হাসপাতাল, তাহলে তিনি কে?
জানা গিয়েছে, তাঁর নাম মোহিনীমোহন গোস্বামী। বাড়ি বিরাটিতে। হাসপাতালের তরফে মোহিনীমোহনবাবুর পরিবারকে জানানো হয়েছিল রোগী সেরে উঠছেন। শুক্রবারও অ্যাম্বুল্যান্স যাচ্ছিল বিরাটির দিকেই। কিন্তু শিবনাথবাবু জানান, তাঁর বাড়ি বিরাটি নয়, খড়দহে। তখনই সবটা পরিষ্কার হয়। এদিকে যেমন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের হারানো বাবাকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ, তেমন গোস্বামী পরিবারে শোকের ছায়া।
গোটা ঘটনা নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তদন্তের জন্য গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের কমিটি। যাঁদের গাফিলতিতে এই বিভ্রান্তি হয়েছে তাঁদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।