
জানা গিয়েছে এদিন সেলিম প্রায় এক ঘণ্টা দশ মিনিট বক্তৃতা করেছেন। সিপিএম সূত্রে খবর, সেই বক্তৃতার মূল নির্যাস, আইএসএফকে নেওয়া আসলে সঠিক কাজ ছিল। তিনি যুক্তফ্রন্টসহ একাধিক উপমা টেনে একুশের কৌশলকে মহিমান্বিত করতে চেয়েছেন। আর তাতেই যেন আগুনে ঘি পড়ে।
সেলিম বক্তৃতা করে নেমে যাওয়ার পর প্রতিনিধি অধিবেশনে জাঙ্গিপাড়া, বাঁশবেড়িয়ার মতো এরিয়া কমিটিগুলি তীব্র সমালোচনায় মুখর হয়।
জাঙ্গিপাড়ায় এবার সংযুক্ত মোর্চার তরফে আইএসএফ প্রার্থী দিয়েছিল। প্রার্থী হয়েছিলেন শেখ মইনুদ্দিন (বুদো)। কে এই বুদো? একসময় তিনি ছিলেন জাঙ্গিপাড়ার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূলের নেতা। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর হুগলি সিপিএম বারবার বলত জাঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসের মূল হোতাই এই বুদো। ঘটনা হল, একুশের ভোটে সেই বুদোর জন্যেই সিপিএম কর্মীদের রাস্তায় নেমে ভোট চাইতে হয়েছে।
সূত্রের খবর, এদিন অধিবেশনে দাঁড়িয়ে জাঙ্গিপাড়ার প্রতিনিধি বলেন, যার হাতে সিপিএম কর্মীরা মার খেয়েছে, যে দলবল নিয়ে পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে, আগুন লাগিয়েছে, জোটের নামে তার হয়েই ভোট চাইতে নামিয়েছিলেন আপনারা। পার্টিটার আর সর্বনাশ করবেন না।
এমনিতে সিপিএমের যে জেলাগুলিতে সম্মেলন ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে তার প্রায় সবেতেই জোট নিয়ে তীব্র সমালোচনা ধ্বনিত হয়েছে। কংগ্রেস তো বটেই। বেশি করে শূলে চড়ানো হয়েছে জোটে আইএসএফকে যোগ করা নিয়ে। প্রসঙ্গত একুশের ভোটে সেলিমও হুগলির চণ্ডীতলা থেকে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু স্বাতী খন্ডকারের কাছে হেরে যান তিনি।
মঙ্গলবার সিপিএমের হুগলি জেলার সম্মেলন শেষ হবে। জেলা সম্পাদক বদলের খুব একটা সম্ভাবনা নেই। কারণ বর্তমান জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ কম বয়সি। তাছাড়া একদা গোষ্ঠীকোন্দলে বিদীর্ণ হুগলির সিপিএমকে দেবব্রত ঘোষ অনেকটাই ভারসাম্যের টিউনে আনতে পেরেছেন বলে জেলার অনেকে মনে করেন। তবে বয়স-সহ আরও অন্যান্য অনেক কারণে জেলা কমিটি থেকে এবার বাদ পড়তে চলেছেন বহু বাঘা বাঘা প্রবীণ নেতা। সম্মেলনের এক প্রতিনিধির কথায়, নেতৃত্বের রদবদল হবে এটা কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু নেতাদের ভয় না পেয়ে নিচুস্তরের কথা জেলা সম্মেলনে যেভাবে তুলে ধরেছে বিভিন্ন এরিয়া কমিটি তা নজিরবিহীন। সবচেয়ে বড় কথা, যার বিরুদ্ধে যে কারণে সমালোচনা তাকে বসিয়ে তার সামনেই তা উগরে দিয়েছেন বিভিন্ন অঞ্চলের নেতারা।