
তারপর চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না। বিলকিস যোগ দিলেন তৃণমূলে। শনিবার একটি রক্তদান শিবির থেকে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম।
বিলকিস বেগম তৃণমূলে যোগ দিয়ে বলেন, সিপিএম যে পথে চলছে তাঁর চেয়ে বিজেপিকে ঠেকানোর প্রশ্নে দিউদি অনেক এগিয়ে। বিলকিস বেগম ছিলেন পার্টির এরিয়া কমিটির সদস্য। তিনি দল ছাড়ায় যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়েছে সিপিএম, তা বলাই বাহুল্য। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, বিলকিস আমার বোনের মতো। এই ওয়ার্ড আমাদের ছিল না কারণ বিলকিস আমাদের দলে ছিলেন না। এবার উনি আমাদের দলে এসেছেন তাই বন্দরে এবার আটে আট করবে তৃণমূল। সেইসঙ্গে সিপিএমের উদ্দেশে টিপ্পনি কেটে ববি হাকিম বলেন, এদের অভ্যেসই হচ্ছে একটার পর একটা ঐতিহাসিক ভুল করা। বিলকিসকে টিকিট না দিয়ে সিপিএম ওঁর প্রতি অবিচার করেছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিলকিসকে কেন টিকিট দিল না সিপিএম?
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিশন চলছে। কাউন্সিলর হিসেবে তাঁর একাধিক কাজ নিয়ে নাকি দলে অভিযোগ জমা পড়েছিল তার ভিত্তিতেই তদন্ত কমিশন গড়ে পার্টি। কিন্তু সেই কমিশন এখনও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট দিয়ে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেনি। এরমধ্যেই পুরভোট চলে আসায় তাঁকে প্রার্থী করেনি দল।
এ তো ঘটনা। কিন্তু সিপিএমের অভ্যন্তরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে এই ঘটনার নেপথ্য কাহিনি সম্পর্কে অন্য ব্যাপারও। কী? সিপিএমের একটা অংশের মতে, গোটা কমিশনটাই সাজানো। বিলকিসকে যাতে আর দাঁড় না করানো হয় তার প্রেক্ষাপট তৈরি করতেই ওই অভিযোগ এবং তার ভিত্তিতে কমিশন। অনেকে এও বলছেন, ফৈয়াজ আহমেদ খানকে প্রার্থী করা হবে বলেই এই চিত্রনাটয লেখা হয়েছিল।
এমনিতে সিপিএমের সিলেবাসে আন্তঃপার্টি সংগ্রাম বলে একটা বই চালু আছে। তাতে বলা হয় দলের মধ্যে কী ভাবে মতাদর্শগত সংগ্রাম চলে। কিন্তু সেই সংগ্রাম যে বন্দরে এমন সংঘাত বাঁধাবে এবং বিলকিস সটান তৃণমূলে যাবেন তা কে জানত। তবে অনেকেই বলছেন, বিলকিসের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাঁকে সরিয়ে ফৈয়াজকে প্রার্থী করে জেতা ওয়ার্ড আগেই প্রায় হেরে বসল সিপিএম। তা ছাড়া দলের অনেকে এও বলছেন, খিদিরপুরে ফৈয়াজাবাদ চলে। উপরের তলায় তাঁর খুঁটির জোর রয়েছে বলে তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না। তাহলেই কোতল হতে হয়। যেমন হতে হল বিলকিসকে!এমনকি কলকাতা জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর অধিকাংশ সদস্য ফৈয়াজকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, বিলকিসকেও প্রার্থী করা হোক। কিন্তু সেসব আর হয়নি! অগত্যা…