
ছাত্র সংগঠন এসএফআই, যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই, শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ, মহিলা সংগঠন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি তো বটেই বালাসঙ্গমেও গত দু’বছরে বিপুল সদস্য সংখ্যা বেড়েছে বলে একাধিক জেলার রিপোর্টে উঠে এসেছে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর কেরলের এর্নাকুলাম জেলা সম্মেলন শুরু হচ্ছে। ওই জেলার সম্পাদক কে এন মোহানন জানিয়েছেন, গত দু’বছরে সবচেয়ে বেশি সদস্যপদ বেড়েছে বালাসঙ্গমে। কেরল সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, এটা শুধু এর্নাকুলাম নয়। সব জেলার চিত্র।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বালাসঙ্গম কী?
সিপিএমের দলীয় ভাষায় এটাকে বলা হয় পায়োনিয়ার্স ফ্রন্ট। অর্থাৎ শিশু বয়সে শরীরচর্চা থেকে শুরু করে নানাবিধ কাজের মাধ্যমে বাম্পন্থী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমাজকে দেখতে শেখানো হয় বালাসঙ্গমে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, আরএসএসের শাখাত যে ভাবে শরীরচর্চা, লাঠিখেলা শেখানো হয় বালাসঙ্গমের ধরনটাও খানিকটা তেমন। তবে আদর্শগত অবস্থানে সঙ্ঘের শাখা আর বালাসঙ্গমের ফারাক আসমান-জমিন। সঙ্ঘের সিলেবাসে দেশপ্রেম-জাতীয়তাবাদ আর বালাসঙ্গমের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকতাবাদ-বামপন্থা!
কেরল সিপিএমের তরফে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে সারা রাজ্যে গত দু’বছরে বালাসঙ্গমের শাখার সংখ্যা বেড়েছে বিপুল। যা নিয়ে উছ্বসিত কেরল সিপিএমের নেতৃত্ব।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাংলায় কী হচ্ছে?
এখানে বলে রাখা ভাল, বাংলাতেও এমন শাখা সংগঠন সিপিএমের রয়েছে। তার নাম কিশোরবাহিনী। কিন্তু অনেক সিপিএমের সদস্যও হয়তো তার নাম শোনেননি। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের রিপোর্টেই বলা হয়েছে, বাংলা এখন তাদের জন্য উর্বর জমি। গত সাত বছ্রে বাংলায় যে ভাবে সঙ্ঘের শাখা বেড়েছে তাতে খুশি নাগপুর। বাংলাকে আগে দুটি সাংগঠনিক জোনে ভাগ করা ছিল আরএসএসের খাতায়। এবার সেই সংখ্যা বাড়িয়ে তিন করা হচ্ছে। গোতা দেশের বামপন্থীরাই মনে করেন বাংলা তাঁদের শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু সেই রাজ্যে গত ১০ বছর ধরে বামেরা দুর্বল হতে হতে প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলায় এই কিশোর বাহিনীর কী অবস্থা।
সংগঠনের মুখ্য সংগঠন পীযূষ ধর একথা মেনেই নিয়েছেন, কেরলের বালাসঙ্গমের সঙ্গে বাংলার কিশোর বাহিনীর কোনও তুলনা চলে না। কারণ দক্ষিণের রাজ্যটির ওই সংগঠনের ব্যপ্তি বিরাট। তবে পীযূষবাবুর বক্তব্য, এ রাজ্যেও কিশোর বাহিনীর ৭০০-র বেশি শাখা রয়েছে। কোভিড পর্বে জেলায় জেলায় ৩৫টির মতো পাঠশালা চলছে। তিনি এও বলেন, এই সময়ের মধ্যে শাখার সংখ্যাও বেড়েছে।
সিপিএমের এক রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, একথা ঠিক যে এ রাজ্যে কিশোর বাহিনীকে পার্টি থেকেও খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখভাল করা হয় না। কেরলে যা নিরন্তর ভাবে চলছে। তথ্য বলছে, কেরলে ছাত্র-যুব ফ্রন্টের অনেক নেতাই উঠে এসেছেন বালাসঙ্গম থেকে। এখন যিনি এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি ভিপি শানু, তিনিও বালাসঙ্গমের নেতৃত্বে ছিলেন। তিরুঅনন্তপুরমের এখন যিনি মেয়র, সেই ২২ বছরের আর্য রাজেন্দ্রন বর্তমানে বালাসঙ্গমের সভানেত্রী।