
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনার (Covid) চতুর্থ ঢেউ আসতে পারে বলে সতর্কতা জারি হয়েছে। সংক্রমণও ঊর্ধ্বশ্বাসে বাড়ছে। জেলায় জেলায় করোনা সংক্রমণের হার তথা পজিটিভিটি রেট কত তা জানতে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। এই সমীক্ষার রিপোর্টে এমন তথ্য পাওয়া গেছে যা চমকে দেবে। জুন থেকে জুলাই মাস অবধি সমীক্ষায় দেখা গেছে, শুধু জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই সংক্রমণের হার মারাত্মক। তার মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে কলকাতা।
রাজ্য সরকারের তরফে সেন্টিনেল সার্ভিল্যান্স (Covid) চালানো হয়েছে জেলায় জেলায়। ‘সেন্টিনেল সার্ভিল্যান্স’ হল সঠিক উপায় নিয়ম বেঁধে প্রতি জেলার একটি নির্দিষ্ট হাসপাতাল থেকে কোভিড রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা। এর জন্য প্রতিটি জেলা থেকে কিছু হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেছে নেওয়া হয়। সেখানে কতজন রোগী ভর্তি হচ্ছেন, দিনের হিসেবে কতজনের করোনা (Covid) পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসছে ইত্যাদি খতিয়ে দেখা হয়। সেই হিসেবে কোন জেলায় সংক্রমণের হার কত, কীভাবে ওঠানামা করছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়া যায়।
জুন থেকে জুলাই অবধি তিন পর্যায়ে ভাগ করে সেন্টিনেল সার্ভিল্যান্স চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে–১ থেকে ৩ জুন অবধি সংক্রমণের হার ০ থেকে ১-এর মধ্য়েই ঘোরাফেরা করেছে। পজিটিভিটি রেট ১-এর বেশি ছিল শুধুমাত্র বসিরহাটে (১.১৬)।
জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করে। ১৫ থেকে ১৭ জুন অবধি সমীক্ষায় দেখা যায় ৮টি জেলায় সংক্রমণের হার ১-এর বেশি। এর মধ্য়ে জলপাইগুড়ি (১.০১), হুগলি (১.৪০), দার্জিলিং (১.৪৫), পূর্ব মেদিনীপুর (১.৫৬), পশ্চিম মেদিনীপুর (১.৬০) , হাওড়া (২.৩৩), উত্তর ২৪ পরগনা (১.৭৫) রয়েছে ইত্যাদি জেলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাইক চড়ছেন ‘শিব-পার্বতী’, মাঝ রাস্তায় তেল শেষ! নাটক করে আটক যুবক
জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ৬ থেকে ৮ জুলাই অবধি সমীক্ষা চমকে দিয়েছে। দেখা গেছে ৯টি জেলায় সংক্রমণের ৫ থেকে ১০-এর মধ্যে। এক লাফে বেড়ে গেছে অনেকটাই। এই তালিকায় বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, মালদা, জলপাইগুড়ি ইত্যাদি জেলা রয়েছে। আর ১১টি জেলায় সংক্রমণের (Covid) হার ১০ থেকে ২০-এর মধ্যে যেখানে উত্তর ২৪ পরগনা (২৩.৬৫), নন্দীগ্রামে (২৪.৭৭) সংক্রমণের হার ২০ ছাড়িয়ে গেছে। কলকাতায় সংক্রমণের হার ১৩.১৩, হাওড়ায় ১৪-এর বেশি, আর উত্তরের দার্জিলিং, কালিম্পঙে ১৮ থেকে ১৯ এর মধ্যে। এর অর্থ হল পাহাড়েও করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করেছে।
সেন্টিনেল সার্ভিল্যান্সের আরও একটা উদ্দেশ্য হল উপসর্গহীন বা অ্যাসিম্পটোমেটিক কোভিড রোগীদের খুঁজে বের করা। সংক্রমণের উপসর্গ না থাকায় বহু রোগীই অধরা থেকে যাচ্ছে, তাঁদের থেকে আবার সংক্রমণ অনেকের মধ্যে ছড়াচ্ছে। এইভাবে সংক্রমণের শৃঙ্খল তৈরি হচ্ছে যার জন্যই কোভিড গ্রাফ মাঝে মাঝেই ঊর্ধ্বে উঠে যাচ্ছে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। রাজ্যে এখন করোনা যেভাবে বাড়ছে তাতে সংক্রমণ ঠেকাতে কোভিড টেস্টের ওপরেই বেশি জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সে কারণেই এই সেন্টিনেল সার্ভিল্যান্সের উদ্যোগ।