
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে বৈদ্যুতিক মিটার, ফ্যান, লাইটের ব্যবস্থা। তবে কবে জ্বলবে আলো, কবে ঘুরবে ফ্যান, তার উত্তর আজও অজানা কোচবিহার (Coochbihar) জেলার শেষ প্রান্তে অসম-বাংলা সীমানা লাগোয়া ফলিমারী এলাকার বাসিন্দাদের।
কারণ দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামে খারাপ হয়ে পড়ে আছে অসংখ্য সোলার প্যানেল! সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকারে ডুবছে গোটা গ্রাম (Loadshedding)। কোনও প্যানেল খারাপ হয়ে গেছে, কোনওটার বা ব্যাটারি কমজোরি। ফলে সবকটিই প্রায় অকেজো। একাধিক সোলার প্যানেল সিস্টেম থাকা সত্ত্বেও তাই দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে গ্রামের হাজারখানেক পরিবার। দিনের বেলা কোনও রকমে তাও আলো জ্বললেও, রাত হলেই অন্ধকার। এমনকি মোবাইল চার্জ করতেও ছুটতে হচ্ছে পাশের রাজ্য অসমে। মোবাইল পিছু দিতে হচ্ছে ১০ টাকা।
রায়ডাক ও সংকোষ নদী ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হয় পূর্ব ফলিমারী গ্রামে। গ্রামের প্রতিটি পরিবারের অভিযোগ, সেখানে প্রায় দুটি বুথ মিলিয়ে হাজার খানেক পরিবারের বসবাস। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের ‘দিনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালে, গোটা পূর্ব ফলিমারী এলাকায় সোলার প্যানেল বসিয়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে জেলা বিদ্যুৎ দফতর।
ঘরে বিদ্যুৎ আসবে, এই আশায় ভারি আনন্দ করে লাইট, ফ্যান, টিভি দোকান থেকে কিনে এনেছিল গ্রামের প্রতিটি পরিবার। সোলার প্যানেলগুলি নতুন থাকাকালীন সেগুলির মাধ্যমে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলো জ্বলেও উঠেছিল। তবে আজও ফ্যান ও টিভি চলেনি গ্রামের কোনও বাড়িতে।
এখন সন্ধ্যা নামতেই আরও খারাপ অবস্থা। অন্ধকারে ডুবছে গোটা গ্রাম। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বাজ পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে একাধিক সোলার প্যানেলের ইনভার্টার। গত পাঁচ বছর একইভাবে চলার পরে কমজোরি হয়েছে সোলার প্যানেলের সমস্ত ব্যাটারি। কোনও কোনও জায়গায় বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকলেও, ব্যাটারি কমজোরি হওয়ায় রাত ৮টা বাজতেই নিভে যায় আলো। হারিকেন অথবা মোমবাতি নিয়ে পড়াশোনা করতে হয় পড়ুয়াদের। নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার আশায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিল্বমঙ্গল সাহা গ্রামবাসীদের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘পূর্ব ফলিমারী বিচ্ছিন্ন এলাকা। দীর্ঘদিন যাবৎ ওই এলাকার একাধিক সোলার প্যানেল খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। ব্যাটারি কমজোরি হয়ে গেছে। সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকারে ডুবছে গ্রাম। আমরা বিদ্যুত দফতর-সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।
কবে নতুন করে জ্বলবে আলো, সেই আশায় দিন কাটাচ্ছেন পূর্ব ফলিমারী এলাকার প্রায় হাজারখানেক পরিবার।