
দ্য ওয়াল ব্যুরো: “মানুষের বাঁচা মরা এখনও ভাবিয়ে তোলে…”
‘মানুষ’-এর ভাল-খারাপ তাঁকে ভাবিয়ে তোলে। তিনি পেশায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হলেও, লেখালেখি বরাবরের ভালবাসা। ‘ফেবুলেখক’ তকমাটা গায়ের সঙ্গে সেঁটে গেছে যেন। অবশ্য সেটাকে পরোয়া করেননি অভীক অর্জুন দত্ত। তাঁর লেখার ইচ্ছে এবং সে লেখা মানুষকে পড়ানোর ইচ্ছের মধ্যে কোনও বাধা রাখেননি তিনি। নিজেই বই ছেপে, নিজেই তা কুরিয়ার করেছেন একসময়ে।
পরবর্তী কালে ফেসবুকে পাঠকদের নিয়ে গ্রুপ তৈরি করেছেন, টাকার বিনিময়ে লেখা পড়তে পারার শর্তে। লকডাউন হওয়ার পরে একের পর এক পিডিএফ বার করেছেন নিজের লেখা বইয়ের। আমফানের সময় তিনি এইভাবেই পাশে দাঁড়ান মানুষের, আর এবার এগিয়ে এলেন শহীদ কমরেড মইদুল মিদ্যার পরিবারের জন্য।
বাম ছাত্র যুবদের ডাকা নবান্ন অভিযানে যান মইদুল মিদ্যা কিন্তু আন্দোলন থেকে তিনি আর ফিরে আসতে পারেননি। পুলিশের লাঠিচার্জে ভীষণ ভাবে আহত হন তিনি, আর তারপরেই অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে মইদুলকে। পেশায় টোটোচালক মইদুলের পরিবারের এসে এবারে দাঁড়িয়েছেন অভীক অর্জুন দত্ত, তৌসিফ হকের মতো মানুষেরা।
অভীক বাবু আবারও কলমকে অস্ত্র করেই মইদুলের পরিবারের জন্য বই লেখেন। ‘মইদুলের জন্য’ নাম দিয়ে পিডিএফটি তিনি মাত্র ১০টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেন। এই পিডিএফের প্রচ্ছদ এঁকে দেন শিল্পী তৌসিফ হক। শুধু এই পিডিএফ নয়, তাঁর উপন্যাস সমগ্র ১,২ ছাড়া বাকি সব বইয়ের পিডিএফ তিনি বিক্রির জন্য তুলে দেন। তার থেকে প্রাপ্ত সব অর্থ পাঠানো হবে মইদুলের পরিবারে।
অভীকবাবু এর আগেও শুধু লিখে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সব টাকার হিসেবে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দিয়ে গেছেন নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে। শুধু লিখে ১০ লক্ষ টাকা তুলে দেন তিনি আমফানের সময়ে। তাই এবারেও তাঁর কলমের ও কথার ওপরে মানুষ ভরসা রেখেছে। মইদুলের পরিবারের জন্য উঠে এসেছে তাঁর লেখার বিনিময়ে ৭৪হাজার টাকা। এই টাকা তিনি তুলে দেন ডি ওয়াই এফ আইকে যাঁরা মইদুলের শিশুদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। অভীক অর্জুন দত্ত নিজেই সেই ডিটেলটস তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন ও ক্যাপশনে সাধারণ মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, “মানুষ চাইলে কী না পারে? তবে এতটাও পারে জানতাম না।”