
তদন্তকারীদের কথায়, দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এই লুঠতরাজ। কমবয়সী মেয়েদেরই টার্গেট করছে হ্যাকাররা। কী ভাবে শিকার বানানো হচ্ছে কলেজ পড়ুয়াদের?
বারুইপুর জীবনতলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী নাদিয়া পেয়াদা। তরুণী জানিয়েছেন, দিনকয়েক আগেই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল কন্যাশ্রীর ২৫ হাজার টাকা। ব্যাঙ্কের পাশ বই আর এটিএম কার্ড হাতে পাওয়ার পরই তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। সেখানে তাঁর এটিএম কার্ডের নম্বর জানতে চাওয়া হয়। বলা হয়, নম্বর না জানালে এটিএম কার্ড ব্লক করে দেওয়া হবে। ভয় পেয়ে নাদিয়া সবটা বলে দেওয়ার পরদিনই দেখেন তাঁর অ্যাকাউন্ট পুরো খালি। শুধু নাদিয়া নন, সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে আরও কয়েকজন কলেজ পড়ুয়ার সঙ্গেও।
বারুইপুর থানার ওসি হিমাদ্রি ভট্টাচার্য জানান, হ্যাকারদের ধরতে বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। কলেজ পড়ুয়াদের সচেতন করতে নানা রকম কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কলেজে কলেজে শুরু হয়েছে ওয়ার্কশপ। জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল হিমাদ্রি ভট্টাচার্য বলেছেন, “সাইবার ক্রাইম নিয়ে ক্লাস নেওয়া শুরু হয়েছে পড়ুয়াদের। সেই সঙ্গে নারীপাচার নিয়েও সতর্ক করা হচ্ছে তাদের। ”
হিমাদ্রিবাবুর কথায়, আঠারো বছর বয়স পার হলেই এই প্রকল্পের আওতায় থাকা ছাত্রীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যায় এককালীন ১৮ হাজার টাকা। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে সেই টাকা দিয়েই চলে পড়াশোনা। সরকারি টাকা খোয়া যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন অনেক ছাত্রীই। হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচতে তাই কলেজে সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কী ভাবে সুরক্ষিত রাখবে সে বিষযে জানানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। পাশাপাশি, নারী ও শিশু পাচারও রুখতে কী করণীয় সেটাও এই সেমিনারের অন্যতম আলোচনার বিষয়।”
ক্যানিং দু’নম্বর ব্লকের বিডিও দেবব্রত পালের কথায়, “আমাদের ব্লক অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এখানে সাইবার ক্রাইম থেকে নাবালিকা বিবাহ সবই চলে পাল্লা দিয়ে। তাই এখানকার কলেজগুলিতেও সেমিনারের আয়োজন করা হবে। সচেতনতা না বাড়লে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।”