
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টিকায়-টিকায় মিলমিশ!
হ্যাঁ, এমন অবাক কাণ্ডই ঘটাতে চলেছে ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রজেনেকা ও রাশিয়ার গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। দুই দেশের দুই কোম্পানির টিকার ডোজ মিলিয়ে সুরক্ষা দ্বিগুণ বাড়ানোর দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্যাপারটা ঠিক কী? অ্যাস্ট্রজেনেকা যে টিকার শট দিচ্ছে তার সঙ্গেই মিলিয়ে দেওয়া হবে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকা। ঠিক জলের মতো মিলিয়ে দেওয়া নয়। কিছুটা আলাদা। অর্থাৎ টিকার প্রথম ডোজ হবে অ্যাস্ট্রজেনেকার, দ্বিতীয়টা রাশিয়ার। তবে স্পুটনিক ভি টিকার অনুকরণেই এই দ্বিতীয় ডোজটা বানাবে অ্যাস্ট্রজেনেকা। প্রথম ডোজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই দ্বিতীয় ডোজ তৈরি হবে। দুই শটে দু’রকম ভাইরাল স্ট্রেন থাকবে।
আরও সহজ করে বলা যাক। অক্সফোর্ডের টিকার ফর্মুলাতেই অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকা তৈরি। অর্থাৎ ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিন। শিম্পাঞ্জির শরীর থেকে নেওয়া সর্দি-কাশির অ্যাডেনোভাইরাসকে ভেক্টর হিসেবে ব্যবহার করে তার ভেতরে করোনার নিষ্ক্রিয় স্পাইক জিন ভরে টিকা তৈরি হয়েছে। গ্যামেলিয়ার স্পুটনিক ভি টিকাও অনেকটা সেভাবেই তৈরি। তবে অন্যরকম অ্যাডেনোভাইরাসের স্ট্রেন ব্যবহার করেছে গ্যামেলিয়া। সেই ভাইরাল স্ট্রেনই তারা অ্যাস্ট্রজেনেকাকে দিতে চলেছে। যাতে স্পুটনিক ভি-এর মতোই টিকার ডোজ তৈরি হয়।
টিকার এই মিলমিশের কারণ হল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকার ডোজ নিয়ে বিভ্রান্তি। অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম শটে ৯২ শতাংস ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে, আবার দ্বিতীয় শট দিলেই ইমিউনিটি কমে ৬০-৭০ শতাংশে পৌঁছে যাচ্ছে। তাই মাঝামাঝি টিকা ৬২ শতাংশ কার্যকরী হচ্ছে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড। অন্যদিকে অ্যাস্ট্রজেনেকা তাদের ট্রায়াল রিপোর্ট এনে বলেছে, টিকা কম করেও ৭০ শতাংশ কার্যকরী। ডোজ নিয়ে ধোঁয়াশার কারণ হল বয়স্ক স্বেচ্ছাসেবকরা। তাঁদের শরীরে টিকার প্রথম ডোজে যতটা হুড়হুড়িয়ে ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে, দ্বিতীয়টায় কমে যাচ্ছে। কমবয়সীদের নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।
এই বিভ্রান্তি কাটাতেই অ্যাস্ট্রজেনেকা নতুন রকম পরীক্ষা শুরু করেছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, স্পুটনিক ভি টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকরী হয়েছে। অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকাও প্রথম ডোজে ৯২ শতাংশ কার্যকরী হচ্ছে। তাই দুই ডোজে যদি দুটি ভিন্নরকম শট দেওয়া যায়, তাহলে ইমিউনিটি দ্বিগুণের বেশি বাড়বে।
রাশিয়ার টিকার উৎপাদন ও বিতরণের দায়িত্বে আছে ডাইরেক্ট ইনভেস্ট ফান্ড তথা আরডিআইএফ। এর প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেছেন, স্পুটনিক ভি টিকার সঙ্গে অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকা মিলে গেলে মিলমিশ ডোজের ক্ষমতা অনেক বাড়বে। তবে মানুষের শরীরে এই টিকার ট্রায়াল করার পরেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। মিলমিশ ডোজ কতটা কাজ করে এখন সেটাই দেখার।