
শোভন চক্রবর্তী
সিপিএমে চলচ্চিত্র উত্সব!
শনিবার বিকেল চারটে কুড়ি মিনিটের শোয়ে প্রিয়া সিনেমা হলে অনীক দত্ত পরিচালিত অপরাজিত (Aparajito) দেখতে যাচ্ছেন বামফ্রন্ট চেয়্যারম্যান বিমান বসু, সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, কলকাতা জেলার সম্পাদক কল্লোল মজুমদাররা। শুধু নেতারা নন। শতখানেক সিপিএম কর্মীও যাবেন অপরাজিত দেখতে।
মূলত উদ্যোগটা নিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। যাদবপুর অঞ্চলের বাম ছাত্র-যুবরা সুজনের কাছে আবদার করেছিলেন অপরাজিত দেখার। শদেড়েক টিকিট কাটা হয়। শনিবার রাতে সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এখন দেখছি গোটা শোয়ের টিকিট বুক করে নিলেই হতো।”
ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এই ছবি (Aparajito) নির্মাণ করেছেন অনীক দত্ত। ছবির ভিতর রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের ছবি তৈরির কাহিনি। অবার সাম্প্রতিক ইতিহাসে সিপিএমের মধ্যেও এই হুজুগ একেবারেই নতুন।
এমনিতে বাম ছাত্র-যুবদের মধ্যে দল বেঁধে নাটক, সিনেমা, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ দেখতে যাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। কিন্তু এভাবে নেতাকর্মী সদলবলে হলে গিয়ে সংগঠিত ভাবে সিনেমা দেখা তা নতুন বৈকি।
যাদবপুরের তরুণ এক সিপিএম নেতা বলেন, “এই ব্যাপারটা পার্টিকর্মীদের মধ্যেও একটা অন্য মাত্রা যোগ করেছে। একটা বড় সময়ে নেতাদের ধার ঘেঁষা যেত না। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে এই একসঙ্গে সিনেমা দেখার উদ্যোগ অচলায়তন ভাঙার মতো। পার্টি যে একটা পরিবার তা অনুভূত হচ্ছে।”
বেশ কয়েক বছর আগে চিটাগং দেখতে এলগিন রোডের আইনক্স ফোরামে গিয়েছিলেন বিমান বসু। সেই সময়ে গোটা ব্যাপারটা ব্যবস্থা করেছিলেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তিনি তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়ন আইএনটিটিইউসির সভাপতি। তারপর বিমান বসু কবে হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছেন তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না।
সুজন চক্রবর্তী বলেন, “টিকিট কেটে নেওয়ার পর বিমানদাকে জিজ্ঞেস করলাম যাবেন নাকি? দেখলাম রাজি হয়ে গেলেন। সূর্যদারও শনিবার কোনও কর্মসূচি নেই। উনিও দেখলাম উত্সাহী। তাই সবাই মিলেই যাচ্ছি।”
Aparajito in IMDb: রেটিং দৌড়ে ‘অপরাজিত’ অনীক দত্ত, পেছনে ফেলেছেন সত্যজিত রায়কেও
অনীকবাবু নিজে সিপিএমের সমর্থক। আবার স্ক্রিনেও (Aparajito) রাজনৈতিক মিশ্রণ রয়েছে। প্রধান চরিত্র জিতু কমল নিজেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ভক্ত বলে প্রকাশ্যে বলেন। তাঁর বিপরীতে আবার রয়েছেন যুব তৃণমূলের সভাপতি সায়নী ঘোষ। তাঁদের অভিনয় আজ বিকেলে হলে বসে দেখবেন সূর্য, বিমান, সুজন-সহ শতাধিক সিপিএম নেতাকর্মী।