
এ বার ঘাস চাষ করে লাভের মুখ দেখুক চাষিরা, উদ্যোগ রাজ্যে
কয়েক বছর ধরেই রাজ্য সরকার বিকল্প চাষে উৎসাহিত করছে রাজ্যের চাষিদের। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় গতানুগতিক ধান, পাট, আলুর বদলে বিকল্প চাষে আগ্রহী হয়েছেন কৃষকরা। পিছিয়ে নেই পূর্ব বর্ধমানও। কালনা, পূর্বস্থলী সহ বিভিন্ন ব্লকের চাষিরা সূর্যমুখী, রজনীগন্ধা, গাঁদা ফুল চাষ করছেন। কোথাও কোথাও পেয়ারা চাষেও ঝুঁকেছেন তাঁরা। এ বার ঘাসের চাষ।
চাষিদের উৎসাহিত করতে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্ধমানে রয়েছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে লেমনগ্রাস, সিট্রনেলা, পালমারোজা-সহ বিভিন্ন সুগন্ধী ঘাসের প্রদর্শন ক্ষেত্র রয়েছে। এই কলেজের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক শিবশঙ্কর দাস জানান, এইসব ঘাস একই গোত্রের। সুগন্ধী ঘাসের তেল বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়। লেমনগ্রাস একবার কোনও জমিতে লাগানোর পর তার গোড়া থেকেই নতুন করে গাছ হয়ে থাকে। ফলে খরচ কম।
উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক দীপককুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এইসব সুগন্ধী ঘাসের তেল মূলত পারফিউম তৈরি বা প্রসাধনী শিল্পে অন্য নানা কাজে ব্যবহার হয়। চাষ করলে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৫ থেকে ২০ টন লেমনগ্রাস মিলবে। তা থেকে ২০০ থেকে ২৫০ লিটার তেল পাওয়া সম্ভব। প্রতি লিটার তেলের দাম ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে প্রতি হেক্টরে কত বেশি টাকা আয় করা সম্ভব এই লেমনগ্রাস চাষ করে।’’
দীপকবাবু জানান, লেমনগ্রাস বা এই সুগন্ধী ঘাস থেকে অয়েল এক্সট্র্যাক্ট বা তেল নিষ্কাশনের যন্ত্রও কম খরচেই বসানো সম্ভব। কমবেশি দুই লক্ষ টাকা খরচ হবে এই যন্ত্র বসাতে। এর সঙ্গে প্যাকিং করতেও কিছু খরচ হবে। বর্ধমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনমির অধ্যাপক সৌমেন বেরা জানান, চাষীরাও তাঁদের কাছ থেকেও সহযোগিতা নিতে পারেন।
ইতিমধ্যেই আউশগ্রাম-২, গলসি-১ ও রায়না-২ ব্লকের কৃষক বাজারে লেমনগ্রাস চাষ ও সেখানেই যন্ত্রের মাধ্যমে তেল তৈরি করে বাজারজাত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল জানান, পরবর্তী ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্লকেও এই লেমনগ্রাস চাষে এগিয়ে আসার জন্য উৎসাহিত করা হবে চাষিদের।