
তপ্ত লাভপুরে এ বার বিক্ষোভ রোষের মুখে বিধায়ক মনিরুল
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ তিন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে স্থানীয় বিজেপি নেতা সুপ্রভাত বটব্যালের বাড়িতে এসে পরিবারের লোকের কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন আশেপাশের বাসিন্দারা। কিন্তু ততক্ষণে চম্পট দিয়েছে তারা। ঘটনার প্রতিবাদে এরপরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। লাভপুর-কাটোয়া রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় অবরোধ। পরে রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদ বিক্ষোভ। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
সুপ্রভাতবাবু দাবি করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমুল। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। পুরোটাই সাজানো। প্রচার পাওয়ার জন্যই মিথ্যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।”
তবে ঘটনার পর প্রায় ৪০ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও অপহৃত তরুণীর কোনও খোঁজ না মেলায় বিক্ষোভের আঁচ বাড়ছে। আজ লাভপুরের পাশাপাশি বিক্ষোভ শুরু হয়েছে লাগোয়া কীর্ণাহার, আবাডাঙা, বিপ্রটিকুড়িতেও। কার্যত বনধের চেহারা গোটা এলাকায়। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। যানবাহন চলাচল। বাসিন্দাদের বক্তব্য, সন্ধে বেলায় বাড়িতে ঢুকে ঘরের মেয়েকে তুলে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। এ ধরণের ঘটনা তাঁদের পরিবারেও ঘটতে পারে। পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়ছে ক্ষোভ।
এ দিন সেই ক্ষোভের মুখেই পড়ে যান বিধায়ক। কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরার সময় ইন্দাস গ্রামে মনিরুল ইসলামের গাড়ি আটকায় বিক্ষোভকারীরা। প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন বিধায়ক। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে তেতে ওঠে এলাকা। বিধায়কের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে নিগ্রহও করে তারা। অবস্থা বেগতিক বুঝে কোনওরকমে গাড়িতে উঠে লাভপুর থানায় আশ্রয় নেন তাঁরা।
এরপরেই কয়েকশো মানুষ ছুটে এসে থানায় ঢোকার চেষ্টা করে। থানা লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে তারা। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
মনিরুল ইসলামের অভিযোগ, বিজেপির ইন্ধনেই তাঁকে নিগ্রহ করা হয়েছে। যদিও বিজেপির জেলা নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।