
দ্য ওয়াল ব্যুরো, শিলিগুড়ি: সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে নতুন রেলপথ। ২০২১ সালে এই প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে। আর এই প্রকল্প নিয়েই ক্ষোভ দানা বাঁধছে কালিম্পং ১ ও ২ ব্লকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রেলপথের জন্য বেআইনিভাবে গাছ কাটা ও মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে এই এলাকায়। তাঁদের জোর করে এলাকা ছাড়তে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। হিমালয়ান ফরেস্ট ভিলেজার্স অর্গানাইজেশন এবং উত্তরবঙ্গ বন–জন শ্রমজীবী মঞ্চ যৌথভাবে এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে। এই প্রকল্প নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন তাঁরা। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে পিটিশন জমা দিয়েছেন। ২ মার্চ জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলার প্রথম শুনানি।
উত্তরবঙ্গ বন–জন শ্রমজীবী মঞ্চের আহ্বায়ক লাল সিং ভুজেল জানান, এই রেলপথের কাজ শুরু হলে প্রায় ২৪ টি গ্রামের মানুষ অসুবিধায় পড়বেন। ইতিমধ্যেই কালিম্পঙ ব্লকের মেল্লি, তারখোলা, রিম্ভিক, কিরনে, ভালুখোপ ফরেস্ট ভিলেজে বসবাসকারী পরিবারকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এলাকায় প্রায় চার হাজার গাছ ইতিমধ্যেই কেটে ফেলা হয়েছে।
আন্দোলনের নেতা সৌমিত্র ঘোষ বলেন, ‘বনাধিকার আইন মেনে এবং গ্রামসভার সম্মতি নিয়ে যদি কাজ করা হয় তবে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। তবে সঠিক আইন না মেনে কাজ করলে আমরা তা মেনে নেবো না। জমির পাট্টা দিতে হবে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে যেভাবে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে বসবাসকারীদের জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে, সেটা এই জেলাতেও সেটা লাগু করা হোক।’
২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকার সময় মমতা ব্যানার্জি সেবক–রংপো রেলপথের শিলান্যাস করেছিলেন। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ১৩৩৯ কোটি টাকা। প্রকল্প অনুযায়ী সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধার ঘেঁষে, পাহাড়ি জঙ্গল ভেদ করে এগিয়ে যাবে রেল। এরজন্য বেশ কিছু জায়গায় পাহাড় কেটে টানেলও বানানো হবে। এখনও পর্যন্ত ১৪টি টানেল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ২৮টি রেল সেতু তৈরি হবে। থাকবে চারটি লেবেল ক্রসিং। জাতীয় বন্যপ্রাণ বোর্ড এবং পরিবেশ মন্ত্রক এ বিষয়ে রেলকে আগেই ছাড়পত্র দিয়েছে।