
ইংরেজির অধ্যাপকদের ছ’ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ, পাল্টা বিজ্ঞপ্তি বিশ্বভারতীর
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বভারতীর তরফে দাবি করা হয়েছে, নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ইংরেজি বিভাগে যান। সেই সময় কোনও অধ্যাপক কিংবা অধ্যাপিকা ইংরেজি বিভাগে উপস্থিত ছিলেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বভারতীর তরফে দাবি করা হয়েছে, নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ইংরেজি বিভাগে যান। সেই সময় কোনও অধ্যাপক কিংবা অধ্যাপিকা ইংরেজি বিভাগে উপস্থিত ছিলেন না। এই ঘটনার পরই ২৬ ফেব্রুয়ারি বেলা বারোটায় বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিভাগের সমস্ত অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়। নির্দেশ মেনেই তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে মৌখিকভাবে, শেষে লিখিতভাবে স্বীকার করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে লিখিত এই মুচলেকাগুলিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেছে। তাছাড়াও ছুটি নিতে হলে সে ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে আবেদন করলেই ছুটি পাওয়া যায়। ইংরেজি বিভাগের সমস্ত অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এমনকি বিভাগীয় প্রধানেরও ছুটির কোনও আবেদন জমা পড়েনি। এই বিষয়টি ছাড়াও অভ্যন্তরীণ কিছু ব্যাপার নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে আলোচলা হয়। সবমিলিয়েই সাত-আট ঘণ্টা সময় লেগে যায় বলে কর্তৃপক্ষের মত।
এ দিকে, শনিবার অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন (আবুটা)-র পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গৌতম মাইতিও একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘আটক থাকাকালীন অধ্যাপকদের ক্রমাগত ভীতিপ্রদর্শন এবং শাস্তি দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। আমরা মনে করি, উপাচার্যের এ ধরণের পদক্ষেপ চরম বেআইনি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন ধ্বংস করার অপপ্রয়াস। উপাচার্যের এই কাজ ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ীও চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’’
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার দুপুরে। বিশ্বভারতীর একাংশ অধ্যাপকের অভিযোগ, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপকেরা একটি বিশেষ সাক্ষ্যগ্রহণ কর্মসূচি করছিলেন। সেই সময় জরুরি বৈঠক আছে বলে তাঁদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা হয়। তারপরেই কাগজের বয়ান দেখতে চাওয়া হয়। অধ্যাপকেরা বয়ান দেখাতে অস্বীকার করলে তাঁদের দীর্ঘক্ষণ আটক করে রাখা হয়। খবর পেয়ে অন্য বিভাগের অধ্যাপকেরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁরা শান্তিনিকেতন থানায় বিষয়টি জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ আটকে পড়া অধ্যাপকরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেরোতে পারেন।
শনিবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। তারপরেই বিশ্বভারতীর তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিষয়টি সামনে আনা হল বলে একাংশের মত।