
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক ভি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এখনই হবে কিনা সে নিয়ে আলোচনা চলছিল নানা মহলে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছিল, রাশিয়ার ভ্যাকসিন রেগুলেটরি কমিটি যতদিন না স্পুটনিক ভি টিকাকে সরকারিভাবে স্বীতৃতি দেয় ততদিন ভারতে এই টিকার ট্রায়াল বৃহত্তরভাবে করা হবে না। সম্প্রতি ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে জানানো হয়েছে, অল্পসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের উপরে টিকার কন্ট্রোলড ট্রায়াল করতে পারে ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবরেটরি। তবে প্রতি পর্যায়ে সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা করতে হবে।
রাশিয়ার তৈরি করোনার টিকা ভারতেও উৎপাদন ও বিতরণ করা হবে, এমন কথাবার্তা চলছিলই। গতমাসে হায়দরাবাদের ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবকে টিকার ডোজ বিক্রি করেছে রাশিয়ার ভ্যাকসিন বিতরণের দায়িত্বে থাকা ডাইরেক্ট ইনভেস্ট ফান্ড (আরডিআইএফ) । রুশ টিকার ট্রায়াল ও বিতরণের জন্য রেড্ডিসের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে রাশিয়ার ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের। প্রাথমিকভাবে যা কথা হয়েছে তাতে ১০ কোটি টিকার ডোজের জন্য রেড্ডি’স-এর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে গ্যামেলিয়ার।
আরডিআইএফ ও ডক্টর রেড্ডি’সের তরফে যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, টিকার সেফটি ও কন্ট্রোলড ট্রায়াল করা হবে ভারতে। কম সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের উপর টিকার ডোজ দিয়ে তাঁদের পর্যবেক্ষমে রাখা হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে খুব তাড়াতাড়ি। রাশিয়াতে এখন স্পুটনিক ভি টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। ৪০ হাজার জনের উপরে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করছে গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবের কো-চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জি ভি প্রসাদ বলেছেন, “ড্রাগ কন্ট্রোলের নির্দেশিকা মেনেই টিকার ট্রায়াল হবে। স্পুটনিক ভি টিকা প্রয়োগের আগে সুরক্ষা যাচাই করে নেওয়া হবে। প্রতি পর্বে টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা করা হবে।”
বিশ্বে প্রথম টিকা নিয়ে আসার দাবি করেছে রাশিয়া। এই টিকা বানিয়েছে মস্কোর গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি। রুশ টিকার নাম তাদের প্রথম মহাকাশযানের নামে স্পুটনিক ভি। গ্যামেলিয়ার ভাইরোলজিস্টরা বলেছেন, প্রথম দুই পর্বে মাত্র ৭৬ জনকে ইঞ্জেকশন দিয়ে টিকা নিয়ে আসার জন্য অনেক কথা হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। কিন্তু মোদ্দা কথা হল, কম জনকে টিকা দিলেও তার ফল একই হয়েছে। অর্থাৎ ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই টিকা শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। পাশাপাশি, করোনাকে ঘায়েল করার মতো ঘাতক টি-কোষও সক্রিয় হয়েছে। এই টিকার কোনও খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।
টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট প্রকাশ করার পরেই সেপ্টেম্বরের প্রথমে আমজনতার জন্য টিকার ডোজ নিয়ে আসে রাশিয়ার গ্যামেলিয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি এবং রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড। সরকারি তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, স্পুটনিক ভি টিকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সক্ষম। প্রথম দুই পর্বের ট্রায়ালে সে প্রমাণ মিলেছে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্টও ভাল। এই পর্যায়ে বহু মানুষের শরীরে টিকার ইঞ্জেকশন দিয়ে দেখা গেছে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কোয়ালিটি টেস্টে পাশ করার পরে মেডিক্যাল ডিভাইস রেগুলেটরের অনুমতিও মিলেছে।