
শীর্ষ সরকারি সূত্রের খবর, নয়াদিল্লি ও মস্কো অন্ততঃ তিনটি বড় বহুদেশীয় মঞ্চে একযোগে কাজ করেছে। সেগুলি হল রাশিয়া-ভারত-চিন (আরআইসি), ব্রিকস ও সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও সেই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। দ্বিপাক্ষিক মেকানিজমকে জোরদার করতে ২+২ ধাঁচে একট নতুন কাঠামোয় দুদেশের বিদেশ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরাও সন্ধ্যায় মোদী-পুতিন বৈঠকের আগে আলোচনায় বসবেন। এপর্যন্ত ভারতের এমন কাঠামো আছে তিনটি মাত্র দেশের সঙ্গে। আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।
সরকারি কর্তারা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক আরআইসি বৈঠকে ভারত কঠোর অবস্থান দেখিয়েছে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) ব্যাপারে। লস্কর-ই-তৈবা বা জয়েশ-ই-মহম্মদ বা পূর্ব তুর্কমেনিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের মতো নির্দিষ্ট কোনও নির্দিষ্ট সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর উল্লেখ ছিল না বটে,তবে শীর্ষ সরকারি অফিসার বলেছেন, গত ১০-১৫ বছরের আরআইসি বিবৃতিতে কোনও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর নামই উচ্চারিত হয়নি। পুতিনের সফরের প্রাক্কালে ভারত দীর্ঘদিন বকেয়া থাকা প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার একে-২০৩ কালাসনিকভ রাইফেল ডিলে ছাড়পত্র দিয়েছে। এর আওতায় রুশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে আমেঠির কোরওয়ায় ৫ লাখের বেশি রাইফেল উত্পাদন হবে। পাশাপাশি পরিকাঠামোগত সহায়তা সংক্রান্ত চুক্তি সেরে ফেলতেও চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা চলছে দুতরফে।
যে স্তরেই আলোচনা হোক না কেন, ভারত বরাবর জোর দিয়েছে, যৌথ বিবৃতি, নথিতে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত উদ্বেগের উল্লেখ রাখতে হবে। কাবুল পতনের পর মোদী, পুতিনের আলোচনা হয়। তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নয়াদিল্লি পাঠানো হয় রুশ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিকোলাই পাত্রুশেভকে।
সময়ের কষ্টিপাথরে উত্তীর্ণ সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় ভারত, রাশিয়া আগামী দশকের জন্য সামরিক-টেকনিকাল সহযোগিতার কাঠামো পুনর্নবীকরণ করতেও তৈরি দুদেশ। পাশাপাশি প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান নিয়ে যৌথ কমিশনের ঘোষণাও হবে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ২০০টি দুই ইঞ্জিনের কামভ-২২৬টি লাইট হেলিকপ্টারের যৌথ উত্পাদন প্রকল্পটিও বকেয়া রয়েছে। সে ব্যাপারে যেমন আলোচনা হবে, তেমনই বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহ প্রস্তাবও চূড়ান্ত করে ফেলতে পারে দুপক্ষ।