Latest News

রুশ ভ্যাকসিন ১৮ থেকে ৬০ বছরের জন্য, শিশু ও বৃদ্ধদের উপরে পরীক্ষাই হয়নি

দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্বে আমরাই প্রথম। গর্বের সঙ্গে মঙ্গলবার করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্বে প্রথম মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর কথা স্মরণ করিয়ে ভ্যাকসিনের নাম রাখা হয়েছে ‘স্পুটনিক ভি’। এখন জানা গেল, সেই ভ্যাকসিন কার্যকরী ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়স্কদের ক্ষেত্রে। এর কম বা বেশি বয়সের ক্ষেত্রে আদৌ কার্যকর হবে কিনা তার পরীক্ষাই করা হয়নি। জানিয়েছেন রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তাই। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু ও অতিবৃদ্ধদেরই করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।

আরও পড়ুন

৩০ হাজার সেনা মোতায়েন পূর্ব লাদাখে, শীতের আগে বড় পদক্ষেপ নয়াদিল্লির

প্রথম হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে ভ্যাকসিনের সাফল্য দাবি করার ক্ষেত্রে রাশিয়া তাড়াহুড়ো করেছে বলে আগেই অভিযোগ উঠেছে। ভ্যাকসিনের তথ্য নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, ভ্যাকসিনের প্রথম স্তরের ট্রায়ালের পরেই রাশিয়া দাবি করেছে টিকা সার্বিকভাবে প্রয়োগের জন্য তৈরি। যেখানে অক্সফোর্ড, মোডার্না এখনও তৃতীয় স্তরের ট্রায়ালেই রয়েছে। এবার রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তাই দাবি করলেন, এই ভ্যাকসিন সব বয়সের জন্য নয়। এই তথ্য দিয়েছেন রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সায়েন্টিফিক সেন্টার ফর এক্সপার্ট ইভ্যালুয়েশন অফ মেডিসিনাল প্রোডাক্টস-এর প্রধান ভ্লাদিমির বোনদারেভ বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক।

ভ্লাদিমির বোনদারেভ জানিয়েছেন, রাশিয়ায় যে কোনও ভ্যাক‌সিনের সাফল্য দাবি করার ক্ষেত্রে বয়স অনুযায়ী তিনটি স্তরে পরীক্ষা করতে হয়। সদ্যজাত থেকে ১৮ বছর, ১৮ বছর থেকে ৬০ বছর এবং ৬০ বছরের বেশি। কিন্তু যে ভ্যাকসিনের সাফল্য দাবি করা হয়েছে সেটি পরীক্ষা করা হয়েছে শুধুমাত্র ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়স্ক স্বেচ্ছাসেবীদের উপরে। সুতরাং, এখন এই ভ্যাকসিন শুধুমাত্র ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়স্করাই ব্যবহার করতে পারবেন।

রাশিয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে করোনার এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি। সংস্থার ডিরেক্টর আলেকজান্দার গিনটসবার্গ অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি নিজে এই ভ্যাকসিন নিয়ে ভাল আছেন এবং তাঁর বয়স ৬০ বছরের উপরে।

এই ভ্যাকসিন তৈরির সাফল্য দাবি করার পরেই রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো বলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রথম ব্যাচের কোভিড ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়ে যাবে। প্রথমে সেটা দেশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরে প্রয়োগ করা হবে। শুধু তাই নয়, রাশিয়া এমনটাও দাবি করেছে যে, ইতিমধ্যেই ২০টি দেশ ভ্যাকসিন চেয়ে রেখেছে। আর তার পরিমাণ ১ বিলিয়ন মানে ১০০ কোটি ডোজ।

রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী, এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয় ১৮ জুন। ৩৮ জন স্বেচ্ছাসেবককে টিকা দেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের পরে রাশিয়া জানায় এই ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারছে। দু’দফায় টিকার ট্রায়াল হয়। দু’টি দলে ভাগ করে ভিন্ন ডোজে টিকা দেওয়া হয় প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছাসেবকদের। তার পরে সরকারি হাসপাতালেই তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানায়, প্রথম দলের সকলের শরীরেই ভাইরাসের মোকাবিলায় প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়েছে। কারও শরীরে টিকার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এই দলের স্বেচ্ছাসেবকদের ১৫ জুলাই হাসপাতালে থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দলকে ডিসচার্জ করা হয় ২০ জুলাই। এর পরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে ঘোষণা করা হয়, টিকার ট্রায়াল সফল হয়েছে। মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন নিরাপদ ও কার্যকরী। সেই সময়ে কিন্তু কোনও বয়সের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

You might also like