
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের এক হিন্দু লেকচারারের উপর টিপ পরা নিয়ে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারিনী জানিয়েছেন, কপালে টিপ পরেছেন বলে উর্দিধারী ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে শুধুমাত্র টিপ পরার ‘অপরাধে’। এমনকি ওই মহিলাকে মোটরসাইকেল দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এখন কার্যত তোলপাড় ওপার বাংলা। এবার তাতেই মুখ খুললেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিথিলা (Rafiath Rashid Mithila)।
আরও পড়ুন: বয়স পেরিয়েছে আড়াই, শতাধিক ইংরেজি শব্দের অর্থ ঠোঁটস্থ বাঁকুড়ার বিস্ময়শিশুর!
ফেসবুকে টিপ পরা একটি ছবি পোস্ট করে যা হয়েছে সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন মিথিলা। লিখেছেন, ‘আমার টিপ নিয়ে কোনও কথা নয়’।
সাদা-কালো সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি পিস্তল হাতে নিয়ে রয়েছেন মিথিলা। সামনের দিকে তাক করা রয়েছে সেই আগ্নেয়াস্ত্র। মিথিলার কপালে রয়েছে উজ্জ্বল এক লাল টিপ। গোটা ছবিতে কেবল ওই টিপটাই রঙিন। লাল রঙা সেই টিপ যেন গনগনে আগুনের মতো জ্বলছে।
এই ছবির সঙ্গে মিথিলা লিখেছেন, ‘আমার টিপ নিয়ে কোনও কথা নয়/ আমার স্বাধীনতা নিয়ে কোনও কথা নয়/ যদি থাকে আমার আগুনে নিশ্চিহ্ন হবার ভয়/ পৃথিবীটা তোমার একার নয়!’
শনিবার বাংলাদেশে যা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলেছেন সেদেশের একাধিক বিশিষ্ট বিদ্বজনেরা। তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের লেকচারার লতা সমাদ্দার টিপ পরার কারণে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। নিশানায় খোদ পুলিশকর্মী। ঢাকার শের-ই-বাংলা নগর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন লতা। তিনি আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে তাঁকে বাজে কথা শুনতে হয়েছে এই টিপ পরা নিয়ে। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে এই আচরণ তিনি আশা করেননি।
ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরেই টিপ পরা নিয়ে প্রতিবাদ আছড়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে দেওয়ালে। ‘টিপ পরা আমার স্বাধীনতা’, ফেসবুকে এই কথা লিখে নিজেদের টিপ পরা ছবি দিচ্ছেন বহু মহিলা। প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পুরুষরাও। রবিবার ঢাকা শহরের রাস্তায় নেমেও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন সেই দেশের মহিলা অধিকার কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, টিপ পরা নিয়ে কটূক্তি এ দেশে বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এবং স্বাধীনতার এত বছর পর স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রে এই ঘটনা উদ্বেগজনক। এতে দেশের এক শ্রেণির মানুষের অসহিষ্ণুতাই প্রকাশ পায়।
পুলিশের পোশাক পরে কে এমন কদর্য আচরণ করল তা জানতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে তারা জানিয়েছে, লতা সমাদ্দার গাড়ির নম্বরের কয়েকটি ডিজিট বলতে পেরেছেন, কিন্তু তা থেকে গাড়িটি শনাক্ত করা যায়নি। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। ওই দিন এলাকায় যাঁদের ডিউটি ছিল, তাঁদের মধ্যেও কাউকে মেলানো যায়নি লতা সমাদ্দারের দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে। অভিযুক্তকে ধরতে পারলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।