
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২৮ জানুয়ারি রাজস্থানের (Rajasthan) ভিলওয়ারায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। ওই দিন সেখানে ভগবান দেব নারায়ণজির জন্ম মহোৎসবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিনই তিনি দেব নারায়ণ মন্দির করিডরের সূচনা করবেন।
বারাণসী, অযোধ্যা এবং উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরের পর রাজস্থানের এই মন্দির হতে চলেছে চতুর্থ হিন্দু পীঠস্থান করিডর যা নরেন্দ্র মোদীর হাত দিয়ে সূচনা হতে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রীর (Prime Minister) ওই একদিনের সফর ঘিরে রাজস্থানের রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। চলছে রাজনৈতিক অঙ্ক কষার পালা। অনেকেই মনে করছেন, মোদীর এই মন্দির সফরের সঙ্গে বিজেপির হিন্দুত্বের রাজনীতির থেকেও বেশি যোগ আছে গুজ্জর ভোট নিয়ে নয়া পরিকল্পনা।
ভিলওয়ারা (Bhilwara) হল রাজস্থানের গুজ্জর সম্প্রদায়বহুল জায়গাগুলির অন্যতম। সরাই মাধোপুর, ঢোলপুর, অলওয়ার জয়পুরেও গুজ্জর সম্প্রদায়ের বাস বেশি। রাজস্থানের ভোট রাজনীতিতে যে সম্প্রদায়ের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
আর এই সম্প্রদায়ের অবিসংবাদী নেতা হলেন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসি, রাজ্যের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট। রাজস্থানের বর্তমান কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সঙ্গে যাঁর সাপে-নেউলে সম্পর্ক।
রাজ্যে বিধানসভার ভোটের আর মাস দশ বাকি। মুখ্যমন্ত্রীর বাসনা পূর্ণ করতে শচীন ইতিমধ্যে রাজ্য সফরে বেরিয়েছেন।
অন্যদিকে, রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরতে গুজ্জর ভোটকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। আগেরবার বিজেপির সরকার হাতছাড়া হওয়ার প্রধান কারণ ছিল গুজ্জর সম্প্রদায়ের ক্ষোভ। বিজেপির বসুন্ধরা রাজের সরকারের বিরুদ্ধে গুজ্জর কৃষকদের আন্দোলন দমনে পুলিশ গুলি চালালে পাঁচ বছরে ৭৩ জন কৃষক মারা যান। নিজের সমাজের লোকের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে পথে নেমে দলকে ক্ষমতায় আনেন শচীন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি তাঁর।
রাজস্থানের রাজনৈতিক মহলের খবর, রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরতে বিজেপি শচীনকে মুখ্যমন্ত্রী করার টোপ দিয়েছে। মরুরাজ্যে তারা অসমের কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে।
এমনিতেই রাজস্থানে বিজেপির অবস্থা ভাল নয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে, প্রদেশ বিজেপির সভাপতি সতীশ পুনিয়া এবং রাজ্যের দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরোধ কংগ্রেসের গেহলট-পাইলট-এর প্রকাশ্য বিবাদকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। ঠিক এই অবস্থাই হয়েছিল অসমে বিজেপির আগের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ শোনওয়ালকে নিয়ে। কংগ্রেস থেকে আসা হিমন্তকে সামনে রেখে গত বিধানসভার ভোটে লড়াই করে বিজেপি। হেমন্তের সঙ্গে বিজেপির ঝুলিতে আসে কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কও। পরে হিমন্তকে মুখ্যমন্ত্রী করে সর্বানন্দকে কেন্দ্রের মন্ত্রী করে দিল্লি পাঠিয়ে দেয় বিজেপি।
রাজস্থানে শচীনের বিজেপিতে যোগদানের রাস্তা প্রশস্ত করতেই তাঁর গুজ্জর সমাজের আরাধ্য ভগবান দেব নারায়ণ মন্দির করিডর চালু করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী, এমনটাই মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।
তবে এই জল্পনা নিয়ে কোনও পক্ষই মুখ খোলেনি এখনও। তবে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার বাসনা পূরণে শচীনের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না দুই শিবিরই। তিনি তেমন সিদ্ধান্ত নিলে বড় মুখ করে বলতে পারবেন গুজ্জর সমাজের দেবতাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কথা। দৃষ্টান্ত হিসাবে তুলে ধরতে পারবেন দেব নারায়ণ করিডর প্রকল্প চালুর পদক্ষেপ।
অবশ্য শচীন বিজেপির ডাকে সাড়া না দিলেও লাভ বৈ ক্ষতি নেই পদ্ম শিবিরের। গুজ্জর ভোটারের মনের ক্ষতে মলম দিতেই ২৮ শে মরুরাজ্যে যাচ্ছেন মোদী।
নওসাদের সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না সুজন, বললেন ‘অনুব্রত হলে জামাই আদর পেতেন’