Latest News

ভেন্টিলেটরে প্রণব, পড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে আঘাত লাগায় অস্ত্রোপচার, সঙ্গে করোনাও

দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোমবার দুপুরে তিনি (পড়ুন তাঁর দফতর) নিজেই টুইট করে জানিয়েছিলেন, তাঁর শরীরের নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তখনও তাঁর পারিবারিক সূত্রে বা হাসপাতালের তরফে প্রকৃত ঘটনা জানানো হয়নি। কিন্তু পরে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় শুধু করোনা আক্রান্ত নন, গতকাল অর্থাৎ রবিবার রাতে বাথরুমে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন প্রণব। সে ঘটনায় মাথায় গুরুতর চোট লাগে। তাঁকে নয়াদিল্লির সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর মাথা ফাটেনি। কিন্তু মস্তিষ্কে আঘাত লেগে রক্ত জমাট বেধে যায়। তা আজ অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়েছে। কিন্তু শ্বাসকষ্ট থাকায় তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটজনক।

গত বেশ কিছুদিন যাবৎ প্রণববাবুর শরীর ভাল যাচ্ছিল না। গত বছর পুজোর সময়ে শেষ বার কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। তার পর থেকেই কমবেশি তাঁর শরীর খারাপ লেগেই রয়েছে। জানুয়ারি মাসেই একবার বাথরুমে পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। তখনও বেশ কিছুদিন সেনা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রণববাবু। পরে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তাঁর শরীরে হিমোগ্লোবিন কম। সোডিয়াম-পটাশিয়ামও কমে গিয়েছে। চিকিৎসকরা তখনই বলেন, প্রণববাবুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করছেন না।

এমনিতে প্রণববাবুর ডায়াবেটিস রয়েছে। তাই গত বিশ বছর ধরে এমনিতেই নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করেন তিনি। কিন্তু ইদানীং খাওয়া দাওয়া অতিশয় কমিয়ে দিয়েছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বয়স হয়েছে প্রায় ৮৫ বছর। আশি বছরের বেশি বয়স্ক মানুষদের করোনা হলে ঝুঁকি বেশি বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তার উপরে তাঁর ডায়াবেটিস থাকায় উদ্বেগ আরও বেশি। তবে জানা গিয়েছে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। কিন্তু বিপদের ঝুঁকি এখনও রয়েছে। তাই তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখতে হয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালে প্রণববাবু বড় রকমের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেদিন ছিল শনিবার। শনিবার সাধারণত ফলাহার করতেন প্রণববাবু। সকাল থেকে প্রায় খালি পেট ছিল। দুপুরে রাষ্ট্রপতি ভবনের স্টাডি থেকে উঠে খেতে যাওয়ার সময়ে মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তা রক্ষীরা তখন তাঁকে ধরে ফেলেন। তার পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নরেশ ত্রেহান নিয়মিত তাঁকে চেক আপ করেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর পর থেকে বাইরের কারও সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ রেখেছিলেন প্রণববাবু। ১০ নম্বর রাজাজি মার্গে তাঁর বাসভবনে তিনি তাঁর মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় কেবল থাকেন। আর থাকেন বহুদিনের পরিচারক পদম। তা ছাড়া তাঁর দফতরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি অভিজিৎ রাইয়ের সেখানে যাতায়াত করতেন। ফলে তিনি কীভাবে কোভিডে সংক্রামিত হলেন সেটা নিয়েই তাঁর পরিবারের সদস্যরা কিছুটা বিস্মিত।

You might also like