Latest News

পেটের টানে নিজের সন্তানদের বন্ধক দিচ্ছেন বাবা-মা! ভিন্ রাজ্যে অমানুষিক পরিশ্রমে বিপন্ন শৈশব

দ্য ওয়াল ব্যুরো: ধর্ম, রাজনীতি, কূটনীতি– এ সব নিয়ে যতই আলোড়ন চলুক না কেন দেশ জুড়ে, এ দেশের একটা বড় সংখ্যক মানুষের কাছে আজও সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেবল দু’বেলা দু’মুঠো ভাত। আর সেটা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝা যায় উত্তরপ্রদেশের শিবপুরী জেলার মুধেনি গ্রামের ঘটনায়। দারিদ্রের কাছে গ্রামবাসীরা এতটাই অসহায়, যে পেটের তাগিদে সন্তানদের বন্ধক রাখতে বাধ্য হচ্ছেন বাবা-মা!

এ যেন প্রেমচন্দের গল্পের প্লট! প্রত্যন্ত গ্রামের এই অদ্ভুত ও অমানবিক প্রথার কথা সামনে আসার পরে এমনটাই মনে করছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠেছে, সরকার কি কিছুই জানে না! সরকারের অবশ্য পাল্টা দাবি, দারিদ্রের কারণে নয়, লোভের কারণেই এমনটা করছেন ওই গ্রামের অভিভাবকেরা। কিন্তু লোভে পড়ে কি সত্যিই কেউ নিজের সন্তানকে বন্ধক দিতে পারেন!

স্থানীয় এখ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশের পরে জানা গেছে, চার বা ছ’মাসের চুক্তিতে ওই গ্রামের নাবালক ছেলেদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাজস্থানে। সেখানে গবাদি পশু চরানো, পশুদের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করানো হয় তাদের দিয়ে। বিনিময়ে টাকা দেওয়া হয় ছেলেটির পরিবারকে। মুধেনি গ্রামের বাসিন্দা কৈলাস যেমন জানালেন, প্রতি বছর ছ’মাসের জন্য সন্তানকে পাঠিয়ে দেন। বিনিময়ে প্রতি মাসে টাকা পান।

সূত্রের খবর, প্রায়ই অত্যাচার ও অনাহারের চিহ্ন শরীরে নিয়ে বাড়ি ফেরে ওই নাবালকেরা। জানায়, হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় তাদের। সঙ্গে জোটে মারধরও। এতেও অবশ্য বন্ধ হয়নি ভিন্ রাজ্যে শিশুদের বন্ধক দেওয়ার এই প্রথা। নিছক কাজে পাঠানোর সঙ্গে এর তফাত আছে। যে ক’মাসের চুক্তি হচ্ছে, সে ক’মাস ওই সন্তানের বিষয়ে কোনও খোঁজখবরও নিতে পারেন না বাবা-মা। শত অসুবিধাতেও ফিরিয়ে আনতে পারেন না সন্তানকে। মেলে না কোনও ছুটিও।

এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা গ্রামবাসীদের কাছে খোঁজখবর নিয়ে দেখেছে, খেতে না পাওয়ার মতো অবস্থা কারওই নয়। তার পরেও টাকার লোভে এমনটা করছেন তাঁরা। তবে মুখে এ কথা বললেও, সরকারি ভাবে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, এত দিনে ন্যাশনাল রুরাল এমপলয়মেন্ট গ্যারান্টি (এনরেগা) প্রকল্পের আওতায় এনে স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করা হবে গ্রামবাসীদের।

সরকারি প্রকল্পের আওতায় নিয়মিত রোজগার শুরু হলে এই প্রথার বদল ঘটে কি না, সেটাই এখন দেখার।

You might also like