
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) এই সেদিন আদালত থেকে বেরোনোর সময়ে বলেছিলেন, আমাকে মেরে ফেলুন, কিন্তু আমাকে স্ত্রী-ছেলেকে রেহাই দিন! শুধু কি তাই? বার বার নিজেকে নিরীহ ও নিরপরাধ বলে দাবি করেছেন মানিক। কিন্তু এবার সেই মানিক ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) বিরুদ্ধে চার্জশিটে বিস্ফোরক দাবি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)।
আদালতে ইডি যে চার্জশিট পেশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজগুলোকে অনুমোদন দিতে ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা করে নিতেন। মানিক নিতেন ২ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। আর এই দুষ্টচক্রে সূত্রধরের ভূমিকায় ছিলেন তাপস মণ্ডল।
বিএড এবং ডিএলএড কলেজ ও প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলিকে রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অনুমোদনও নিতে হয়। ২০১১ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই সঙ্গে এনসিটিই-র সদস্য ছিলেন তিনি। আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। পার্থ মন্ত্রী হিসাবে এই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাঁর দফতরের এনওসি পাইয়ে দিতেন। এনওসি ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের ব্যবস্থা করে দিতেন পার্থ। আর এই টাকা পুরোটাই নগদে নিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
একইভাবে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ছাড়পত্রের জন্য বেসরকারি কলেজগুলি থেকে নগদে ২ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে নিতেন মানিক।
.
বারাসতের প্রাক্তন স্কুল হেডমাস্টার তথা একাধিক টিচার্স ট্রেনিং কলেজের কর্ণধার তাপস মণ্ডল জেরায় ইডিকে আরও জানিয়েছেন, অফলাইনে ভর্তির নামে মানিকের নির্দেশে তিনি ছাত্রপিছু ৫ হাজার টাকা করে তুলেছিলেন। অন্য কলেজগুলিও এভাবে ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা আদায় করত। তার পর অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে গৌতম দাস সেই টাকা একত্রিত করে মানিকের কাছে পৌঁছে দিত। এভাবে মোট ২০ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন মানিক ভট্টাচার্য।
কাঁদো কাঁদো মানিকের আর্তি, ‘আমায় মেরে ফেলো, বউ-ছেলেকে জড়িও না’