
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিজের মেয়ের চাকরিতে জালিয়াতির অভিযোগে মঙ্গলবারই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে (Paresh Adhikary) সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। পরেশের মেয়ে অঙ্কিতা ২০১৮ সালে মেখলিগঞ্জের স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁর নিয়োগ নিয়ে সেই সময়েই অভিযোগ উঠেছিল। চার বছর পর সেই মামলায় মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের (CBI Probe) নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিন রাত আটটার মধ্যে নিজাম প্যালেসে পরেশকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে আদালত রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে, যতদিন না এ ব্যাপারে কিছু প্রমাণ হচ্ছে ততদিন পরেশকে মন্ত্রিসভার বাইরে রাখা হোক।
আরও পড়ুন: পরেশের মেয়ের শিক্ষিকার চাকরিতে জালিয়াতির অভিযোগ, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
তবে যে সময়ে পরেশের মেয়ে অঙ্কিতার স্কুলের শিক্ষিকার চাকরিতে নিয়োগ হয়েছিল সেই সময়ে তিনি মন্ত্রী ছিলেন না। সেই সময়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরেশবাবু বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি পার্থবাবুর হাত ধরেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: তিন মাস আগে হইচই হয়েছিল, পরেশের মেয়ে চাকরিটা পেয়েই গেল মেখলিগঞ্জের স্কুলে
২০১৯ সালে পরেশ অধিকারীকে কোচবিহার লোকসভায় প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কিন্তু তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নিশীথ প্রামাণিকের কাছে বিপুল ভোটে হারতে হয়েছিল তাঁকে। এরপর একুশের ভোটে মেখলিগঞ্জ বিধানসভায় ফের তাঁকে প্রার্থী করে শাসকদল। বিধানসভায় অবশ্য জেতেন পরেশ অধিকারী। জেতার পর তাঁকে ক্যাবিনেটেও জায়গা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: মেয়ের চাকরি থেকে নিজের লোকসভার টিকিট, পরেশের প্রাপ্তি যোগ লেগেই রয়েছে
এদিন সিঙ্গল বেঞ্চ সিবিআই নির্দেশ দেওয়ার পরে আর ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানানোর সুযোগ হয়নি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর। কারণ ততক্ষণে কোর্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বিকেল সওয়া পাঁচটা পর্যন্ত যা খবর তাতে আদালতের নির্দেশ মানতে হলে মন্ত্রী পরেশকে সিবিআই দফতরে যেতেই হবে।
আরও পড়ুন: শুধু পরেশ-কন্যা নন, এসএসসিতে গরমিলের গল্প ভূরিভূরি
এমনিতেই স্কুল সার্ভিস নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের কার্যত নাস্তানাবুদ অবস্থা। বাগ কমিটির রিপোর্টে যা বলা হয়েছে তা দেখে বিরোধীদের অনেকে বলছেন, এটা আরএকটা ব্যাপম কেলেঙ্কারি। তাতে বলা হয়েছে এসএসসি-র গ্রুপ সি নিয়োগে যে ৩৮১ জনের চাকরি হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষাতেই বসেননি। এবার চার বছর আগে একটি নিয়োগের মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এতদিন পর্যন্ত এসএসসি সংক্রান্ত যে যে মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট তার সবকটিই ছিল প্যানেলে নিয়োগের দুর্নীতি। অর্থাৎ একটা গোটা প্যানেলে অনেকের দুর্নীতি হয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি নিয়োগ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। যা নজিরবিহীন বলে মত অনেকের।
আরও পড়ুন: পরেশের মেয়ের নাম লিস্টে ছিল না, প্রমাণ আছে? স্কুল সার্ভিস নিয়ে রাগত জবাব পার্থর