
দ্য ওয়াল ব্যুরো : নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছিল কয়েকটি কৃষক সংগঠন। বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, কেরল ও পাঞ্জাবের কয়েক হাজার কৃষক মিছিল করে রাজধানীতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের অনেকে ছিলেন ট্র্যাক্টরে। অনেকে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। বিজেপি শাসিত হরিয়ানার পুলিশ ব্যারিকেড করে তাঁদের পথ আটকায়। কৃষকরা ব্যারিকেড সরিয়ে এগতে গেলে বেধে যায় ধুন্ধুমার। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। জলকামান ব্যবহার করে।
এর আগে দিল্লি সরকারও বলে দিয়েছিল, শহরে মিছিল করতে দেওয়া হবে না। করোনা অতিমহামারীর মধ্যে বড় সংখ্যক মানুষের সমাবেশ হলে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মিছিল যাতে ঢুকতে না পারে, সেজন্য গুরুগ্রাম ও ফরিদাবাদ সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। শহরে মেট্রো চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্যে কোথাও বড় সমাবেশ করা যাবে না। গত দু’দিন ধরে পাঞ্জাবের সব বাসের যাওয়া-আসা বন্ধ করে দিয়েছে হরিয়ানা সরকার। বহু রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছে। যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে তোলা ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, কৃষকরা ব্যারিকেড সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। পুলিশ তাঁদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে। বুধবার রাতে কারনাল ও সোনেপতে কৃষক মিছিল আটকানো হয়েছিল। ঠান্ডার মধ্যে পুলিশ তাঁদের দিকে জলকামান থেকে জল ছোড়ে। এদিন সকালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল টুইট করে বলেন, কেন্দ্রের তিনটি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকরা প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। আইনগুলি প্রত্যাহার করার বদলে কৃষকদের শান্তিপূর্ণ মিছিলকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা অন্যায়। শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার সকলেরই আছে।
পাঞ্জাবের অনেক কৃষক এখন হরিয়ানা সীমান্তে উপস্থিত হয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, পুলিশ আর এগতে না দিলে তাঁরা সেখানেই ধরনায় বসবেন। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন জানিয়েছে, আগামী দিনে তাদের দু’লক্ষ সদস্য হরিয়ানায় ঢুকবেন।
কৃষকরা মিছিলের জন্য ইতিমধ্যে শাকসবজি, অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য এবং কাঠ জড়ো করছেন। ঠিক হয়েছে, ট্রলিতে করে কম্বল ও ত্রিপলও নিয়ে যাওয়া হবে। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের হরমিত সিং কাদিয়ান বলেন, ৬০০ থেকে ৭০০ ট্র্যাক্টর ট্রলি নিয়ে তাঁরা দিল্লি অভিযানে যাবেন। তাঁদের সঙ্গে ছ’মাসের খাবার থাকবে। প্রতিটি ট্র্যাক্টরে চড়ে ২২ জন রওনা হবেন দিল্লির উদ্দেশে।
সমাজকর্মী মেধা পাটেকরের নির্দেশে কৃষকরা মধ্যপ্রদেশ থেকে মিছিল করে দিল্লিতে যাচ্ছিলেন। আগ্রায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। মেধা পাটেকর গ্রেফতার হন।