Latest News

বরফ পড়ছে হু হু করে, খোলা আকাশের নীচে অনশনে লাদাখের ‘র‍্যাঞ্চো’! কী বললেন নতুন ভিডিও বার্তায়

দ্য ওয়াল ব্যুরো: হু হু করে বরফ পড়ছে। তুষারের গুঁড়ো উড়ে এসে ঢেকে দিচ্ছে নাক-মুখ-চোখ। তবুও নির্বিকার সোনম ওয়াংচুক (Sonam Wangchuk)। মাইনাস ১৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় খোলা ছাদের নীচে বজ্রকঠিন পণ করে অনশন করছেন বাস্তবের র‍্যাঞ্চো। তাঁর প্রাণপ্রিয় লাদাখ আর সেখানকার মানুষকে বাঁচাতে হবে যে!

অপরিকল্পিত নগরায়নে দ্রুত বদলে যাচ্ছে জলবায়ু, যার ফলশ্রুতিতে প্রকৃতির ভয়াবহ রোষানল আছড়ে পড়ছে পাহাড়ের মানুষের উপর। জোশীমঠ সহ উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জায়গার ভয়াবহ ভূমিধস তার প্রমাণ। তাই লাদাখের প্রকৃতিকে বাঁচাতে সেখানে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন রুখতে সরকার ও মানুষের নজর আকর্ষণ করার লক্ষ্যে গত ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে খরদুংলা পাসে মাইনাস ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অনশন শুরু করেন সোনম। আজ সোমবার শেষ হচ্ছে ৫ দিন ব্যাপী সেই অনশন। তবে এর মধ্যেই সরকার ও পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁকে গৃহবন্দী করে রাখার অভিযোগ তুলেছেন সোনম। বর্তমানে নিজের বাড়ির এলাকার মধ্যে থেকেই অনশন (climate fast) চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

রবিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বাস্তবের র‍্যাঞ্চো। তিনি জানান, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির প্রশাসনের তরফে বন্ড কাগজ পাঠানো হয়েছে তাঁকে। সেখানে বলা হয়েছে, লেহ জেলার সাম্প্রতিক অনুষ্ঠান বিষয়ক কোনও ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা, বিবৃতি দেওয়া, জনসাধারণের উদ্দেশে ভাষণ, কিংবা এই বিষয়ক কোনও জনসমাবেশে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। এমনকী, তাঁর বাড়ির এলাকার মধ্যেই অনশন সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয় তাঁকে।

রবিবার একটি ভিডিও বার্তায় সোনম জানান, ‘হিমালয়, হিমবাহ, লাদাখ এবং তার মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে ভারতীয় সংবিধানের ২৪৪ ধারার ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী আমি পাঁচ দিন ব্যাপী অনশনের কথা ঘোষণা করেছিলাম। আমাকে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল, আমার সুরক্ষার জন্য পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমিও সেটাই ভেবেছিলাম,’ দাবি ওয়াংচুকের। তিনি আরও জানিয়েছেন, এরপরেই তাঁকে কার্যত গৃহবন্দি করে রেখেছে লাদাখ প্রশাসন।

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লেহর পুলিশ সুপার পিডি নিত্যা। ‘তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়ায় খরদুংলা পাসে ওঁকে অনশন করার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। যেহেতু ওঁর এবং ওঁর অনুগামীদের সেখানে যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তাই ওঁকে হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভস লাদাখ (এইচআইএএল) ক্যাম্পাসের ভিতর অনশন করতে অনুরোধ করা হয়েছিল,’ জানিয়েছেন তিনি।

সোনম ওয়াংচুককে আধুনিক লাদাখের রূপকার বলা যায়। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন এই ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ম্যাগসেসে পুরস্কার। তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই ৩ ইডিয়টস সিনেমায় র‍্যাঞ্চোর চরিত্রটি ভাবা হয়েছিল, যেখানে র‍্যাঞ্চো ওরফে ফুংসুক ওয়াংড়ুর ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল আমির খানকে। বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্যে ১৯৮৮ সালে ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখ’ প্রতিষ্ঠা করেন সোনম। পুরো ক্যাম্পাসটিতে কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। ব্যবহার করা হয় না জীবাশ্ম জ্বালানিও। সেখানে রান্নাবান্না থেকে শুরু করে সমস্ত বৈদ্যুতিক কাজকর্মই হয় সৌরশক্তিতে।

লুকোচুরি খেলতে গিয়ে ভোজবাজির মতো উবে গেল কিশোর! ৬ দিন পর পাওয়া গেল অন্য দেশে

You might also like