

শুরু সুনেকো সাশামতো নামে সেই তরুণীর পেশাদার জীবনেরও। সেই থেকে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্যামেরা হাতে, আজ ১০৬ বছর বয়সে পৌঁছেও ক্যামেরা নামিয়ে রাখেননি তিনি। অভাবনীয় ভাবে, এই বয়সেও সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন ছবি তোলার। বার্ধক্য এসেছে নিয়ম মেনে। অসুস্থতাও ভর করেছে সময়ের সঙ্গে। কিন্তু সেসব কিছু তুচ্ছ হয়ে গেছে কাজের প্রতি তাঁর প্যাশনের কাছে।
জাপানের প্রথম মহিলা চিত্র সাংবাদিক হিসেবে যখন সুনেকো সাশামতো কাজ শুরু করেছিলেন, তখন থেকে একেবারে চোখের সামনে দেখেছেন জাপানের বিবর্তন। দু’-দু’টি বিশ্বযুদ্ধের ক্ষত দেখেছেন তিনি। পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে তাঁর চোখের সামনে। এখনকার অত্যাধুনিক জাপানে পৌঁছনোর যাত্রাপথ জুড়ে নিজে হেঁটে এসেছেন তিনি। সমস্ত সময়টা ধরে নিয়েছে তাঁর ক্যামেরার লেন্স। ফ্রিজ় করেছে অসংখ্য যুগান্তকারী মুহূর্ত।
শুধু কি জাপানের পরিবর্তন! কাজের সূত্রে অন্য বহু দেশ ঘোরা হয়েছে তাঁর। ক্যামেরার চোখে চিনে নিয়েছেন নানা সময়ের নানা দেশের পরিপ্রেক্ষিত। শুধু তাই নয়, নিজের জীবদ্দশায় ক্যামেরার বিবর্তনও দেখে চলেছেন তিনি। সেই প্রাচীন কালের ভারী ফিল্ম ক্যামেরা থেকে এযুগের হাল্কা ডিজিটাল ক্যামেরা– সবটুকুই গ্রহণ করেছেন সাদরে।
এই করেই বয়স হয়েছে ১০৬। ইতিমধ্যেই মারাত্মক এক দুর্ঘটনায় ভেঙে গিয়েছে তাঁর বাঁ হাত আর দু’টি পা। কিন্তু তাতেও কাজ থামাননি তিনি। এই অবস্থাতেও বছরের পর বছর নিয়মিত প্রদর্শনী আয়োজন করেছেন তিনি। নিজের একটি বইও প্রকাশ করেছেন। তিনি যেন থামতে জানেন না শত প্রতিকূলতাতেও!
তাই তো কেবল ক্যামেরাকে ভালবেসে, ফোটোগ্রাফির প্রতি তীব্র নেশায় এখনও কাজ করে চলেছেন তিনি। নিজের মধ্যে ধারণ করছেন সুদীর্ঘ সময়ের ইতিহাসের ওঠাপড়াকে। তাঁর জীবন যেন সকলকে বার্তা দেয়, নিজের শর্তে বাঁচতে চাইলে কোনও বাধাই বাধা নয়।