
তবে এর পেছনে আছে বিশেষ কারণ।
নতুন এই প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.১.৫২৯। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, হু সিদ্ধান্ত নেয়, নতুন এই স্ট্রেনের নাম দেওয়া হবে ওমিক্রন। প্রসঙ্গত, নিউ-এর পরে ছিল গ্রিক বর্ণ জাই, যার বানান হল Xi, অর্থাৎ ‘শি’। এই দুটিকেই বাদ দিয়ে বাছা হয়েছে পরবর্তী বর্ণ ওমিক্রন।
এই নামকরণ প্যানেলের অন্যতম সদস্য, প্যানডেমিক-স্পেশ্যালিস্ট মার্টিন কুলডর্ফ জানিয়েছেন, সমস্যা আসলে নিউ-কে নিয়ে নয়, সমস্যা তার পরের অক্ষর শি-কে নিয়ে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক মার্টিন কুলডর্ফের মতে, নতুন ভ্যারিয়েন্টের নাম যদি নিউ দেওয়া হত, তাহলে পরবর্তীতে কোনও স্ট্রেন প্রকাশ্যে এলে নাম দিতে হতো ‘জাই’ বা ‘শি’। কিন্তু চিনের প্রেসিডেন্টের নাম শি জিনপিং। তাই বিশ্বের অন্যতম রাষ্ট্রনেতার নামে করোনাভাইরাসের স্ট্রেনের নামকরণ করতে চায়নি হু। তাই সৌজন্যের খাতিরে শি-কে এড়াতে টপকে যাওয়া হল নিউ-কেও!এই ঘটনায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে কি চিন-কে খুশি করতেই হু-এর এই সিদ্ধান্ত! এত দিন ধরে চলে আসা ধারাবাহিক নামকরণের শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়া হল আচমকা! প্রসঙ্গত, করোনার আঁতুরঘর চিনই। এই দেশেই প্রথম কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়েছিল মাংসের বাজারে। আবার এমন অভিযোগও আছে, যে চিনের ল্যাবে ওই ভাইরাস কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছিল।
সে যাই হোক না, কেন, চিনের সঙ্গে করোনার যোগ অত্যন্ত নিবিড়। তাই এই পরিস্থিতিতে চিনের প্রেসিডেন্টের নামে করোনার ভাইরাসের নামকরণ হলে খারাপ বার্তা যেতে পারে বিশ্বের দরবারে। এসব ভেবেই শি-কে এড়াতে একবারে দু’ধাপ এগিয়ে সামনে এসেছে ওমিক্রনের নাম।
হু জানিয়েছে ওমিক্রন প্রজাতি ডেল্টার থেকেও সংক্রামক, ঝড়ের গতিতে জিনের গঠন বদলে ফেলতে পারে। একে সুপার-স্প্রেডার এই প্রজাতিকে ‘উদ্বেগজনক’ বা ‘ভ্যারিয়ান্ট অব কনসার্ন’ বলে ঘোষণা করেছে হু।
ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, গত বছর মার্চ থেকে করোনার যে প্রজাতি ভারতে ছড়াতে শুরু করেছিল তা এখন অনেক বদলে গিয়েছে। সুপার-স্প্রেডার হয়ে উঠেছে, মানে অনেক দ্রুত মানুষের শরীরে ঢুকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সার্স-কভ-২ হল আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) ভাইরাস। এর শরীর যে প্রোটিন দিয়ে তৈরি তার মধ্যেই নিরন্তর বদল হচ্ছে। এই প্রোটিন আবার অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে সাজানো। ভাইরাস এই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলোর কোড ইচ্ছামতো বদলে দিচ্ছে। কখনও একেবারে ডিলিট করে দিচ্ছে। এইভাবে বদলের একটা চেইন তৈরি হয়েছে। আর এই এই রূপ বদলের কারণেই নতুন নতুন প্রজাতির দেখা মিলতে শুরু করেছে।