
আমের জেলা মালদা। মরসুমের শুরুতেই বাজারে আসে এখানকার গোপালভোগ আম। স্বাদে গন্ধে মাত করা এই আম প্রতি বছর বিক্রি হয় কেজি প্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। এ বার সেখানে দর নেমেছে ৮ থেকে ১০ টাকায়। খুব ভাল জাতের গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি। আমের বাজার হিসেবে পরিচিত শহরের চিত্তরঞ্জন মার্কেট, নেতাজী মার্কেট, বা রেগুলেটেড মার্কেট, সর্বত্রই হাহাকার করছেন ব্যবসায়ীরা। চিন্তার মেঘ ঘনাচ্ছে আমচাষিদেরও।
কালিয়াচক ১,২,৩ এই তিনটি ব্লকেই প্রতিবার লিচুর ফলন হয় সর্বাধিক। এ বার লিচুর ফলনও অন্য বছরের তুলনায় বেশি। কিন্তু কেনার লোক না থাকায় দাম নামছে হুড়মুড়িয়ে। কালিয়াচকের ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর এই সময় লিচু বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১২০ টাকায়। এ বার সেই দাম ৪০ টাকা। তবুও মুখ ফিরিয়েছেন ক্রেতারা।
একই ছবি নদিয়াতেও। আড়ংঘাটা, দত্তফুলিয়া, শান্তিপুর এই সমস্ত এলাকায় প্রচুর আমের বাগান রয়েছে ।বছরের প্রথমে ওই সব বাগান পাইকারি আড়তদারেরা কিনে নিয়ে গুটি ধরা থেকে আম পাকা পর্যন্ত লোক দিয়ে পরিচর্চা করেন। পাকা আম নামলে লরি বোঝাই করে বাইরের রাজ্যে পাড়ি দেয় হিমসাগর ,গোলাপখাস, ফজলি। ভালই লাভের মুখ দেখেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। এই বছর নিপা ভাইরাসের গুজবে জলের দরে আম বিক্রি হলেও খরিদ্দারের দেখা নেই। কোথাও পাইকারি বাজারে আম বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে। কোথাও আবার তার থেকেও কম।
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের নতুনবাজারের ব্যবসায়ী গোপাল দেব বললেন, “এই সময় প্রতি বছর প্রতিদিন ১০০কেজি লিচু বিক্রি করি। এ বার সেখানে ৪০ কেজিও হচ্ছে না। কী রোগের ভয়ে যে মানুষ ফল খাচ্ছে না তাও বুঝতে পারছি না।”
শুধু জেলায় নয় নিপা আতঙ্কে ধাক্কা খেয়েছে শহর কলকাতার ফলের বাজারও। চেতলা সিআইটি মার্কেটের ব্যবসায়ী শেখ আসলাম বলেন, “প্রতিবছর রোজা চলাকালীন ফলের বাজারও চাঙ্গা থাকে। এ বার আম লিচু সব উঠলেও বিক্রি নেই।” তবে এটাও ঠিক ব্যবসায়ীরা চাহিদা নেই বলে জানালেও শহরের অধিকাংশ বাজারেই কিন্তু হিমসাগর আম এ দিন বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।