Latest News

ভারত টপকে গেল চিনকে, একদিনে ৬৭ হাজারের বেশি নবজাতক

দ্য ওয়াল ব্যুরো: অপুষ্টির ভারত। শিশু মৃত্যুর হারে এগিয়ে থাকা ভারত। নববর্ষ ঘুচিয়ে দিল অনেক গ্লানি। নবজাতকের জন্মের নিরিখে বিশ্বের সব দেশকে টপকে শীর্ষে ভারত। ইউনিসেফের রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সালের প্রথম দিনে ভারতে ৬৭ হাজার ৩৮৫ জন নবজাতকের জন্ম হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৩০ কোটির ভারত শিশু জন্মের নিরিখে টপকে গেছে চিনকেও।

ইংরাজি নতুন বছরের প্রথম দিনে জন্ম নেওয়া নবজাতকদের সংখ্যার তালিকা তৈরি করে ইউনিসেফ। প্রতি বছরই ইংরাজি নববর্ষের প্রথম দিনে এই তালিকা বানানো হয়। ২০২০ সাল থেকে নয়া শতক শুরু হচ্ছে। সেক্ষেত্রে নতুন বছর ও নতুন শতকে জন্ম নেওয়া শিশুদের বিশেষভাবে স্বাগত জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ইউনিসেফের একজিকিউটিভ ডিরেক্টর হেনরিয়েটা ফোরের কথায়, “নতুন বছর ও নতুন শতকে জন্ম নেওয়া নতুন অতিথিরাই আমাদের আশা ও ভবিষ্যতের রাস্তা তৈরি করবে। ক্যালেন্ডারে যতগুলো জানুয়ারির পাতা উল্টানো হবে, ভবিষ্যত প্রজন্মরা তাদের মেধা, দক্ষতা, স্বকীয়তা নিয়ে তাদের জীবনের পথে এগিয়ে যাবে।”

উনিশেও শিশু জন্মের হারে চিনকে টপকে গিয়েছিল ভারত।  ২০১৯ সালের প্রথম দিনে ভারতে ৬৯ হাজার ৯৪৪ জন নবজাতকের জন্ম হয়েছিল। কুড়িতে ইউনিসেফের রিপোর্ট বলছে, চিনে বছরের প্রথম দিনে ৪২ হাজার ২৯৯ জন নবজাতকের জন্ম হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারত এগিয়ে অনেকটাই। নবজাতকের সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয়ে চিন, তৃতীয়ে নাইজিরিয়া (২৬.০৩৯)। এরপর পাকিস্তান (১৬,৭৮৭), ইন্দোনেশিয়া (১৩,০২০), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১০,৪৫২), কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (১০,২৪৭) এবং ইথিওপিয়া (৮,৪৯৩)।

অনাহার, নিরক্ষরতা, দারিদ্র, অনুন্নয়ন সেই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, ভারতের নাম রয়েছে সবেতেই। কমপ্রিহেনসিভ ন্যাশনাল নিউট্রিশনাল সার্ভের (CNNS) একটি সমীক্ষা চমকে দিয়েছিল। সেই রিপোর্ট বলেছিল, ভারতে  দু’বছর বয়সের কম ৬.৪ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। পাঁচ বছরের নীচে ৩৫ শতাংশ শিশুর বয়সের তুলনায় প্রয়োজনীয় বৃদ্ধি হয়নি। ১৭ শতাংশ শিশু দিনে একবার আধপেটা খেয়ে থাকে। এদের ওজন কম, উচ্চতাও কম।  প্রতি তিন জনে এক জন বয়সের তুলনায় খর্বকায়।

২০০৫-০৬ সালে দেশের ৫ বছরের কমবয়সী শিশুর ৭০ শতাংশ ছিল অপুষ্টিজনিত রোগের শিকার। ২০১৫-১৬ সালে দেশের ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই হার ৩৮-৭৮ শতাংশের মধ্যে। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষাও বলছে, দেশে পাঁচ বছরের নীচে থাকা প্রায় ৫৮ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে সাত কোটি শিশু রক্তাল্পতায় ভোগে। বয়সের তুলনায় ওজন কম সাড়ে চার কোটি শিশুর। যার মূল কারণ অপুষ্টি। হিমোগ্লোবিনের অভাবে এই শিশুরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে সহজে। রোগের শিকার হয়। অপুষ্টির কারণে এদের মস্তিষ্কেরও পূর্ণ বিকাশ ঘটে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’-র মতে অসচ্ছল আর্থ-সামাজিক কারণ এর জন্য দায়ী। বিশ্ব ব্যাঙ্কের ২০১৬-র তথ্য বলছে, এ দেশের ২৭ কোটি মানুষ এখনও দারিদ্রসীমার নীচে। ফলে পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় ওই শিশুরা  এক দিকে যেমন পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বড় হওয়ায় প্রায়ই এরা রোগের শিকার হয়।

You might also like