
এই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, “১৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে-র মধ্যে ৭০০ জন ভলান্টিয়ারের শরীরে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের শরীরেই ভাল কাজ দিচ্ছে ভ্যাকসিন। এইও ভ্যাকসিন সুরক্ষিত। খুব বেশি যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে তা হল ইঞ্জেকশনের স্থানে ব্যথা। সবথেকে কম ডোজের দুটি ইঞ্জেকশন ১৪ দিনের ব্যবধানে সবাইকে দেওয়া হয়েছে। তাতেই সবার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।”
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, করোনাভ্যাকের প্রভাব শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরিতে পড়েছে। কিন্তু যাঁরা একবার করোনা সংক্রামিত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাঁদের শরীরের তুলনায় সেই অ্যান্টিবডি কম। যদিও তাতেও বিজ্ঞানীরা আশা করছেন এই ভ্যাকসিন করোনাভাইরাস ঠেকাতে সক্ষম হবে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১৪ দিনের ব্যবধানে দু’বার ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই ভ্যাকসিনের প্রভাব অনেক বেশি বাড়তে শুরু করে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা মাথায় রেখে ৩ মিলিগ্রাম ডোজের ইঞ্জেকশন সবথেকে বেশি কার্যকরী বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা।
এই গবেষণা করা হয়েছে চিনের নাঞ্জিংয়ের জিয়াংশু প্রভিনসিয়াল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনে। গবেষক দলের প্রধান ফেংচাই ঝু বলেন, “১৪ দিনের ব্যবধানে দুটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে চার সপ্তাহের মাথাতেই শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে করোনাভ্যাক। অর্থাৎ চার সপ্তাহের মধ্যেই নিজের প্রভাব তৈরি করে এই ভ্যাকসিন।”
ঝু আরও বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি অতিমারীর সময় জরুরি ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করা যাবে। দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যদি কোভিডে ঝুঁকি কম থাকে, সেই সময় এক মাসের ব্যবধানে দুটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে তার প্রভাব অনেক বেশি হবে। অর্থাৎ ১৪ দিনের জায়গায় এক মাসের ব্যবধানে দুটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে অ্যান্টিবডি তৈরিতে তার প্রভাব অনেক বেশি হবে। অবশ্য এই ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে কতদিন পর্যন্ত তার প্রভাব থাকছে সেই বিষয়ে এখনও গবেষণা প্রয়োজন।”
চিনে করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তির দেহ থেকে ভাইরাসকে আলাদা করে করোনাভ্যাক তৈরি করা হয়। তারপরে জিয়াংশু প্রদেশে সুইনিং কাউন্টিতে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল করা হয়েছে। যদিও এই ট্রায়ালের বিষয়ে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক নাওর বার জিভ বলেন, “তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ না হওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের ফল ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। এমনকি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের পর এবং টিকার লাইসেন্স পাওয়ার পরেও আমাদের একই রকমের সতর্ক থাকা উচিত।”