
সরকারি ভাবে মমল্লাপুরম এখন বাঙালির কাছে মহাবলীপুরমই রয়ে গেছে। দক্ষিণে বেড়াতে যাওয়া বাঙালি চেন্নাই গেলে একবার কাঞ্চীরপুরম আর মহাবলীপুরমে যাবেই। সমুদ্রের ধারের মন্দিরগুলোর গায়ের কাজ নোনা বাতাস আর ভিজে বালিতে নষ্ট হয়ে গেছে। তবে ভিতরের ভাস্কর্য অনেক জায়গায় রয়ে গেছে কালের সাক্ষী হিসাবে। পাহাড় কেটে কোথাও অর্জুন, কোথাও দেবী দুর্গা। সাবেক সিল্করুট – চিনের সঙ্গে ভারতের যোগসূত্র। সেখানেই নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করতে চাইছেন দুই নেতা।
জীবনে কোনও যুদ্ধে পরাজিত না হওয়ার বিরল কৃতিত্ব যে কয়েকজন মুষ্টিমেয় রাজার রয়েছে, পল্লবরাজ প্রথম নরসিংহবর্মন তাঁদের অন্যতম। পল্লবদের রাজধানী ছিল কাঞ্চীপুরম। সেই ষষ্ঠ-সপ্তম শতক থেকে ভারতের সঙ্গে এই পথে সম্পর্ক চিনের। ইতিহাসবিদদের মতে চৈনিক পরিব্রাজক জুয়াংজ্যাং এই শহরে এসেছিলেন। জুয়াংজ্যাংকে অবশ্য বাঙালি চেনে হিউয়েন সাং নামে। তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন পল্লবরাজ মহেন্দ্র। অনেকে মনে করেন চৈনিক সন্ন্যাসী বোধিধর্ম আসলে ছিলেন একজন পল্লব। চিনে মার্শাল আর্ট নাকি তিনিই নিয়ে গিয়েছিলেন।
Mahabalipuram: Modi-Xi meeting
মহাবলীপুরম: ষষ্ঠ শতক থেকে ভারত-চিন সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। ভিডিও সৌজন্য: দূরদর্শন
The Wall এতে পোস্ট করেছেন শুক্রবার, 11 অক্টোবর, 2019
ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া) মতে মহাবলীপুরম ছিল সমুদ্রবন্দর। এখানে চিন, পারস্য ও রোমের প্রচুর মুদ্রা পাওয়া গেছে। যা থেকে মনে করা হয় এখান থেকেই পণ্য সংগ্রহ করতেন বণিকরা। বিদেশি বণিকরা এখান থেকে কেনাকাটা করতেন বলেই এখানে তাদের দেশের মুদ্রা পাওয়া গেছে। এই শহর ছিল সিল্ক রুটের অন্তর্গত।
সিল্করুট মানে যাঁরা ভাবছেন সিকিমের গুরুদোংমার তাঁদের বলে রাখি, ১৯৭০-এর দশকের আগে কোনও দিনই ভারতের মধ্যে ছিল না সিকিম। ষষ্ঠ শতকে দক্ষিণ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ মহাবলীপুরম বন্দর দিয়েই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় রেশম (সিল্ক) পাঠাত চিন।
এবার হয়তো ইতিহাসের সেই পথ নতুন করে মোদী চেনাবেন শি জিনপিংকে। দেখাবেন ঠিক কোথায় ছিল সেই বন্দর, যা এখন সমুদ্রের গ্রাসে। কোন পথে কী ভাবে চলত বাণিজ্য। এখানে একটা জাদুঘরও রয়েছে, যেখানে রয়েছে পুরোনো দিনের সাঙ্কেতিক পতাকা, প্রাচীন কালে কী ভাবে বার্তা পাঠানো হত তার সচিত্র ব্যাখ্যা। হয়তো তাও শি জিনপিংকে ঘুরিয়ে দেখাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ইতিমধ্যেই দুই রাষ্ট্রপ্রধান পৌঁছেছেন চেন্নাইয়ে। চেন্নাই থেকে ৫৬ কিমি দূরে মমল্লাপুরম।
চিনের ক্ষেত্রে বলা যায়, মমল্লাপুরম ধর্মেও আছে, বাণিজ্যেও আছে। প্রশ্ন হল এবার তার সঙ্গে আর কিছু যোগ হবে কিনা।
পড়ুন, দ্য ওয়ালের পুজোসংখ্যার বিশেষ লেখা…
https://www.four.suk.1wp.in/pujomagazine2019/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%aa-%e0%a6%ad/