
এ বার একুশে জুলাই রবিবার পড়ার কারণে কিছু মানুষ যে কম আসবেন তা নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন দিদি। তবে তাতে যে জমায়েতে সার্বিক প্রভাব পড়বে না তাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সভামঞ্চ ঘুরে দেখার পর বেশ কিছুক্ষণ চেয়ার বসে সুব্রত বক্সী, মালা রায়দের সঙ্গে আলোচনা সারেন তৃণমূলনেত্রী। সঙ্গে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, তাপস রায়দের মতো একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন মমতাকে দেখা যায়, গৌতম ভট্টাচার্য, লগ্নঞ্জিতা চক্রবর্তী, জ্যোতি চৌধুরী, সোমা ঘোষদের মতো একাধিক ছাত্রনেতা নেত্রীদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে।
এমনিতেই জমায়েত নিয়ে এ বার ঘোর সংশয়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। উত্তরবঙ্গের জমায়েত আশানরূপ হয়নি। জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার, মালদহ থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর—অন্যবার যেমন ট্রেন ভরে তৃণমূল কর্মীরা কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন, এ বার তা দৃশ্যতই উধাও। উত্তরবঙ্গ থেকে লোক আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা। শাসক দলের অনেকে নেতারই বক্তব্য ভোটে বিপর্যয়ের পাশাপাশি সদ্য হওয়া বন্যাও উত্তরবঙ্গের জমায়েত কম হওয়ার অন্যতম কারণ।
পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই প্রশ্ন, তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সার্বিক চিত্র দেখে বুঝে গিয়েছেন এ বার জমায়েত তেমন হবে না? এ ব্যাপারে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু ট্রেন কমানোর মমতার মন্তব্য নিয়ে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না। এ সব কথা সায়ন্তন বসু বললে তবু মানা যায়, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর মুখে মানায় না।” তিনি আরও বলেন, “আসলে দিদিমণি বুঝে গিয়েছেন লোক হবে না। তাই আগের দিন থেকেই কাঁদুনি গাইতে শুরু করেছেন।”
যদিও রেলদফতর সূত্রে খবর, হাওড়া থেকে তারকেশ্বর, ব্যান্ডেল, বর্ধমান ও কাটোয়া শাখায় বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেল। শিয়ালদহ থেকে ক্যানিং, লক্ষ্মীকান্তপুর, কৃষ্ণনগর ও বনগাঁ শাখায়ও স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিরাট মঞ্চের ব্যাকড্রপে স্লোগান লেখা, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে দাও, মেশিন নয় ব্যালট ফেরাও।’ এ বার যে দিদি একুশের মঞ্চ থেকে ব্যালটের দাবি তুলবেন এবং আগামীর আন্দোলনের সুর বেঁধে দেবেন তা অনেক আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। এ দিনও সভামঞ্চ পরিদর্শন করতে এসে বললেন, “মেশিন নিয়ে যখন এত অভিযোগ উঠছে, তখন উচিত ব্যালট ফিরিয়ে দেওয়া। আমি নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে।” সোনভদ্রে যাওয়ার পথে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে আটকে দেওয়া নিয়েও উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তো দাগেন মমতা।
তবে রাজনৈতিক মহলের সব চোখ এখন রবিবারের ধর্মতলার দিকে। কেমন হয় জমায়েত, কী বলেন দিদি।