
স্থানীয় সূত্রে ও পশুপতি অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি থেকে জানা গেছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে বারাসতের রামকৃষ্ণপুর এলাকার একটা রাস্তার কুকুরকে পাথর দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। এমন অমানবিক ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্য প্রসেনজিৎ দত্ত ও আরও কয়েক জন। গুরুতর আহত অবস্থায় কুকুরটিকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন সংগঠনের নিরাপদ আশ্রয়ে। সেখানে এক পশু চিকিৎসক আহত কুকুরটির চিকিৎসা করেন। দিন দুয়েক ধরে চিকিৎসা ও শুশ্রূষা করেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি ওই কুকুরটিকে। ১১ ফেব্রুয়ারি ওই কুকুরটির মৃত্যু হয়।
সোসাইটির পশু চিকিৎসক সবুজ রায় জানিয়েছেন, মারধরের ফলে কুকুরটির ঘাড়ের কয়েক জায়গার হাড় ভেঙে গিয়েছিল। তার পায়ের হাড়ও ভেঙে গিয়েছিল। ব্যাপক ভাবে ইন্টারনাল হেমারেজ এবং হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ফলে কুকুরটির মৃত্যু হয়েছে।
পশুপতি অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য প্রসেনজিৎ দত্ত বলেন, “রামকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা তথা বারাসত পুরসভার সাফাই কর্মী বিনোদ বংশীর নৃশংস ভাবে মারের ফলেই কুকুরটির মৃত্যু হয়েছে। আমরা দোষী ব্যাক্তির শাস্তি চাই।”
সংগঠনের সম্পাদক লোপামুদ্রা বসু বলেন, কী কারণে এই ভাবে একটা রাস্তার কুকুরকে মারধর করলেন তিনি, সেই বিষয়ে গ্রহণযোগ্য কারণ জানতে পারেননি। শুনেছি রাস্তার এই কুকুরটি নাকি তাঁকে কামড়ানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এর জন্য কুকুরটিকে এই ভাবে মেরে ফেলতে হবে! এক জন মানুষ হিসাবে একথা মানতে পারছি না। যাঁরা ওই কুকুরটিকে মারতে দেখেছেন তাঁরা অবশ্য কেউই দেখেননি যে কুকুরটি ওই ব্যক্তিকে কামড়াতে উদ্যত হয়েছিল।
বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের কাছে অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। তবে আমি বলতে পারি এই ভাবে একটা রাস্তার কুকুরকে মারা খুব অন্যায় কাজ হয়েছে। ভালো না লাগতে পারে কিন্তু অবুঝ প্রাণীকে মেরে ফেলাটা নিঃসন্দেহে অন্যায় হয়েছে।
এব্যাপারে অভিযুক্তের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এলাকার লোকজন বলছেন যে কুকুরটি প্রায়ই লোকজনকে তেড়ে কামড়াতে যেত। এই কুকুরটিকে নিয়ে এলাকার লোকজন আতঙ্কে ছিলেন।
কিছু দিন আগেই কুকুর নিয়ে প্রতিবেশী এবং স্থানীয় কাউন্সিলরের ‘ফতোয়া’র জেরে পোশ্যদের রক্ষায় প্রশাসনের কাছে আত্মহত্যার আবেদন করেছিলেন বারাসতের এক মহিলা। সেটা ছিল পশুপ্রেমের বশবর্তী এক মহিলার আর্তি। একই জায়গায় কিছুদিনের মধ্যে দেখা গেল সম্পূর্ণ বিপরীত একটি ছবি।