
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই শুক্রবার মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। পরে তিনি জানিয়েছেন, ছোট ব্যবসায়ী, দোকানদার, পাইকারি বিক্রেতাদেরও এ বার পেনশনের ব্যবস্থা করবে তাঁর সরকার। ৬০ বছর বয়সের পর থেকে মাসে তিন হাজার টাকা করে পেনশন পাবেন তাঁরা।
কিন্তু মোদীর সেই ঘোষণা বাংলায় এসে পৌঁছতেই প্রশ্ন উঠেছে, এখানকার ব্যবসায়ী, দোকানদার, খুচরো বিক্রেতারা কি সেই সুযোগ পাবেন? নাকি কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের জেরে সেই সুযোগও হাতছাড়া হবে!
গত মেয়াদের শেষ তথা অন্তর্বতী বাজেটে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বলা হয়েছিল, ২ হেক্টরের কম জমি যে সব চাষীদের রয়েছে তাঁরা কেন্দ্রের সরকার থেকে বছরে ৬ হাজার টাকা করে পাবেন। প্রথম কিস্তির ২ হাজার টাকা ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষকদের দিয়েও দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু বাংলায় সেই যোজনা শুরু করতে দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। ফলে পশ্চিমবঙ্গের চাষীরা ওই টাকা পাননি। লোকসভা নির্বাচনের সময় প্রচারে এসে সে কথা বলেওছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া এর আগে কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকেও বাংলাকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল নবান্ন।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, এক্ষেত্রে দুটি পৃথক বিষয় রয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প বাবদ কোনও রাজ্যে যে খরচ হবে তার অংশীদারিত্ব কেন্দ্র-রাজ্য দুইয়েরই রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, রাজ্য যখন চল্লিশ শতাংশ অর্থ খরচ করছে তখন প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে প্রকল্পের প্রচার করা চলবে না। তাই ওই প্রকল্প থেকে তিনি বাংলাকে প্রত্যাহার করে নেন। সেই সঙ্গে বাংলায় সরকারি কর্মচারী, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক-কর্মীদের জন্য পৃথক বিমার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু পেনশন প্রকল্পে রাজ্যের কোনও আর্থিক দায় নেই পুরোটাই কেন্দ্রের।
অর্থমন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ছোট ব্যবসায়ী, দোকানদার, পাইকারি বিক্রেতারা যদি পেনশনের সুবিধা নিতে চান, তা হলে তাঁদেরও অল্প টাকা মাসে মাসে চাঁদা দিতে হবে। কারও বয়স ১৮ বছর হলে তাঁকে দিনে ২ টাকা তথা মাসে ৬০ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তবেই ৬০ বছর বয়সের পর তিনি মাসে ৩ হাজার টাকা পেনশন পাবেন। আবার যাঁর বয়স চল্লিশ বছর তাঁকে মাসে ২০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এ জন্য দেশের প্রতিটি ব্লকে ব্লকে নাম নথিভুক্ত করতে সুবিধা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।
মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, সমস্যা হল এই ধরনের ডেলিভারি ব্যবস্থায় কেন্দ্রের নিজস্ব পরিকাঠামো নেই। রাজ্যের পরিকাঠামোই কেন্দ্র ব্যবহার করে। অর্থাৎ ব্লক উন্নয়ন অফিস বা মহকুমা উন্নয়ন অফিস। অনেক সময় অবশ্য কেন্দ্র সরকার ডাকঘর বা ব্যাঙ্ককেও ব্যবহার করে। ফলে রাজ্য সরকার যদি সহযোগিতা না করে তা হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অর্থমন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, সবে প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যগুলিকে কোনও রকমের নির্দেশিকা পাঠানো হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে নির্দেশিকা পাঠানোর পর তারা কী জবাব দেয় আগে সেটা দেখতে হবে।