
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অক্সফোর্ডের ফর্মুলায় তৈরি সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড টিকা এবং ভারত বায়োটেক ও আইসিএমআরের যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোভ্যাক্সিন টিকাই দেওয়া হচ্ছে ভারতীয়দের। দেশের বাজারে এখন এই দুই টিকাকেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিদেশি ভ্যাকসিনের মধ্যে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকার ট্রায়াল চালাচ্ছে হায়দরাবাদের ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরি। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই টিকার ট্রায়ালের ফল বেশ ভাল। আগামী মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যেই দেশের বাজারে চলে আসবে স্পুটনিক ভি টিকা। কম দামে সরকারকে বিক্রি করা হবে টিকা।
ডক্টর রেড্ডিসের প্রধান দীপক সাপরা বলেছেন, দেশের মানুষজনের শরীরে স্পুটনিক টিকা সুরক্ষিত ও নিরাপদ কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পরেই গণহারে টিকাকরণ শুরু হবে। ট্রায়ালের প্রতিটি পর্যায়ের রিপোর্ট জমা করা হবে কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থার কাছে। সাপরা বলেছেন, এখনও অবধি দেখা গেছে এই টিকার ট্রায়ালে কোনওরকম সমস্যা হয়নি।
স্পুটনিক টিকা তৈরি করেছে রাশিয়ার গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। রাশিয়ার ডাইরেক্ট ইনভেস্ট ফান্ডের তত্ত্বাবধানে ভারতে এই টিকার উৎপাদন ও বিতরণের জন্য চুক্তি হয়েছে ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরির সঙ্গে। প্রথম দফায় প্রায় ২০ কোটি টিকার ডোজের জন্য চুক্তি করেছে গ্যামেলিয়া। আরডিআইএফ ও ডক্টর রেড্ডি’সের তরফে যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, টিকার সেফটি ও কন্ট্রোলড ট্রায়াল করা হচ্ছে ভারতে। কম সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের উপর টিকার ডোজ দিয়ে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবের কো-চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জি ভি প্রসাদ বলেছেন, “ড্রাগ কন্ট্রোলের নির্দেশিকা মেনেই টিকার ট্রায়াল হচ্ছএ। স্পুটনিক ভি টিকা প্রয়োগের আগে সুরক্ষা যাচাই করে নেওয়া হয়েছে। প্রতি পর্বে টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা করা হবে।”
মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজারের টিকা ৯০ শতাংশ কার্যকরী ঘোষণা করার পরেই রাশিয়ার গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট দাবি করে স্পুটনিক ভি টিকা ৯২ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। টিকার ট্রায়ালের রিপোর্ট এনে রুশ কোম্পানি দাবি করেছে, এই টিকার ডোজে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে স্বেচ্ছাসেবকদের। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মতো ইমিউন পাওয়ার তৈরি হচ্ছে শরীরে।
স্পুটনিক টিকা কতটা কার্যকরী সে বিষয়ে রিপোর্ট সামনে আনে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেডিক্যাল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’। গবেষণাপত্রে জানানো হয়, ৭৬ জনকে টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছিল। ৪২ দিন ধরে চলেছিল টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। প্রথম ডোজ দেওয়ার ২১ দিনের মধ্যেই অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। গবেষকদের দাবি, দ্বিতীয় রিপোর্ট পাওয়া যায় ট্রায়ালের ২৮ দিন পর থেকে। দেখা গেছে, টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই রক্তে টি-কোষ তথা টি-লিম্ফোসাইট কোষ সক্রিয় হতে শুরু করেছে। এই টিকা ৯১.৮% কার্যকরী বলে রিপোর্ট পেশ করে ল্যানসেট।