
এইমসের সেন্টার ফর কমিউনিটি মেডিসিনের প্রফেসর ডক্টর সঞ্জয় রাই জানিয়েছেন, গত শনিবার থেকে ৩৫০০-এর বেশি স্বেচ্ছাসেবক এই কোভ্যাক্সিনের ট্রায়ালের জন্য নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২২ জনের স্ক্রিনিং হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “প্রথম স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দিল্লির ৩০ বছরের এক বাসিন্দা কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন। তাঁকে দু’দিন আগে স্ক্রিনিং করা হয়েছিল। তাঁর শারীরিক স্থিতি স্বাভাবিক ছিল। তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যাও নেই।”
ডক্টর সঞ্জয় রাই আরও জানিয়েছেন, “শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ০.৫ মিলিলিটারের প্রথম ডোজ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও সাইড এফেক্ট দেখা যায়নি। দু’ঘণ্টা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। সাত দিন পরে ফের তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে দেখা হবে।”
শনিবার আরও কয়েকজনের স্ক্রিনিং রিপোর্ট এলে তাঁদের শরীরেও কোভ্যাক্সিনের প্রথম পর্যায়ের ডোজ দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
ভারতে কোভ্যাক্সিনের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর ১২টি হাসপাতালের নাম জানিয়েছে। তার মধ্যে দিল্লির এইমস রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৩৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০০ জন এইমসের। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২টি হাসপাতালের অন্তত ৭৫০ স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে আইসিএমআর।
জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল করা হবে ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে সুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে। তাঁদের যেন অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকে, তা পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হবে। গর্ভবতী নন, এমন মহিলাদের শরীরেও এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দেখা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে যে ৭৫০ জনের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে তাঁদের বয়স ১২ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত হবে বলেই জানিয়েছেন এইমসের ডিরেক্টর ডক্টর রণদীপ গুলেরিয়া।
এইমসের ডিরেক্টর বলেন, প্রথম পর্যায়ে আমরা ভ্যাকসিন কতটা সুরক্ষিত তা পরীক্ষা করে দেখব। সেটাই আমাদের কাছে প্রাথমিক বিষয়। ভ্যাকসিন দিলে মানুষের শরীরে কোনও সাইড এফেক্ট দেখা যাচ্ছে কিনা সেটাও দেখা হবে। কতটা ডোজ দেওয়া সম্ভব তাও পরীক্ষা করে দেখা হবে প্রথম পর্যায়ে।
জানা গিয়েছে, ভ্যাকসিনকে দু’ভাবে দেওয়া হবে। প্রথমে ৫০ জনের শরীরে ভ্যাকসিনের কম শক্তির ডোজ দেওয়া হবে। সেটা যদি তাঁরা সহ্য করতে সক্ষম হন, তাঁদের শরীর যদি সুস্থ থাকে, তাহলে ফের ৫০ জনের শরীরে বেশি শক্তির ডোজ দেওয়া হবে। এভাবেই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা দেখা হবে।
হায়দরাবাদের কোম্পানি ভারত বায়োটেক এই কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে। এই কাজে আইসিএমআর ও ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ভায়রোলজি তাদের সাহায্য করেছে। কয়েক দিন আগেই ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার তরফে এই ভ্যাকসিনকে মানবেদেহে ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই কাজই শুরু হয়েছে শুক্রবার।