
জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যসচিব (পাওয়ার) রোহিত কানসাল জানিয়েছেন, “স্বাধীনতা দিবসের সময়েই বিদ্যুৎ পেয়েছিল কেরান সেক্টর। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে মাচিলের গ্রামগুলিতেও বিদ্যুৎ পৌঁছল। খুব তাড়াতাড়ি আমরা আশেপাশের সব কঠিন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেব।” আগামী বছরের মধ্যে সীমান্তের সব এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে প্রশাসনের।
এতদিন পর্যন্ত মাচিল সেক্টরের ২০টি গ্রামে ডিজেল জেনারেটরের তরফে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছনো হত। কিন্তু এবার থেকে ইলেকট্রিক গ্রিডের মাধ্যমে এই পরিষেবা পৌঁছনো হবে।
কুপওয়ারার জেলাশাসক অনশুল গর্গ জানিয়েছেন, “আমরা প্রথমে ৯টি গ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। কিন্তু আগামী ২০ দিনের মধ্যে বাকি সব গ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। তার ফলে এই এলাকার অন্তত ২৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।”
এর আগে কেরান সেক্টরের মতো মাচিল সেক্টরেও প্রতিদিন সন্ধেবেলা তিন ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হত। এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, “ডিজেল জেনারেটরের মাধ্যমে ইলেকট্রিক পরিষেবা দেওয়া খুব কঠিন। কারণ ডিজেলের পরিমাণের উপরেও তা অনেকাংশে নির্ভর করছে। তাই অনেক সময় অনেক সমস্যা হত। কিন্তু এখন ইলেকট্রিক গ্রিড এসে যাওয়ায় সেই সমস্যা আর হবে না। দেশের সবথেকে উত্তরের অংশ এই মাচিল। তাই এখানে ইলেকট্রিকের পিলার লাগানো কঠিন কাজ ছিল। কিন্তু এখন কোনও রকমের সমস্যা ছাড়াই বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া যাবে।”
কুপওয়ারা থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে মাচিল। প্রায় ৬ মাস ধরে উপত্যকার অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল এই সেক্টর। যেহেতু একেবারে নিয়ন্ত্রণ রেখার উপরেই এই সেক্টর রয়েছে, তাই এই এলাকায় মাঝেমধ্যেই অনুপ্রবেশের খবর পাওয়া যায়। সেইসঙ্গে সীমান্তের ওপার থেকে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভেঙে প্রায়ই গুলি চলে এই এলাকায়। তাই নিরাপত্তার দিক থেকেও এই বিদ্যুৎ পরিষেবা উপকারী হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহাকে জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবার কাজ সম্পূর্ণ করতে। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ প্রকল্পের আওতায় ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা শুধুমাত্র এই বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
এই কাজের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের কারণে প্রথমে এই কাজ করতে দেরি হচ্ছিল। কিন্তু এখন জোর কদমে কাজ চলছে। ধাপে ধাপে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করে দেওয়া হবে। ডিজেল থেকে ইলেকট্রিকে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এক বছরের মধ্যে গোটা সীমান্তবর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।