
একটি ভিডিও বার্তায় নিজের কথা বলেছেন ওই যুবক। সেখানে তিনি বলেন, “আমি জানি না কে গুলি চালিয়েছিল। আমি আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ করেছিলাম আমার পরিবারকে বাঁচানোর জন্য। তাঁরা সেখানে দাঁড়িয়ে সবটা দেখছিলেন। আমি একজন জওয়ান। আমি সবসময় দেশের হয়ে কাজ করেছি। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ন্যায্য তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
ভিডিও বার্তায় ধীরেন্দ্র বলেন, “এই বৈঠকে অনেক আধিকারিক ছিলেন। আমি তাঁদের আগেই সতর্ক করেছিলাম যে সেখানে গণ্ডগোল হতে পারে। কিন্তু তাঁরা বৈঠক চালু রাখেন। সংঘর্ষে প্রশাসনের আধিকারিকরাই যুক্ত ছিলেন।” তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের উপর আরও অভিযোগ জানিয়েছেন যে অনেক বলার পরেও যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়নি। এই ঘটনায় তাঁর পরিবারের একজনের মৃত্যু হয়েছে ও আটজন আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ধীরেন্দ্র।
এখানেই থেমে থাকেননি ধীরেন্দ্র। তিনি আরও বলেন, “আমার বাবাকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়েছে। আমার পরিবারকে লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। আমাকে মারা হয়েছে। ভিডিওতেই সব দেখা যাচ্ছে। আমি একজন রাজপুত। আমি ১৮ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে কাজ করেছি। আমি নিজেকে বাঁচিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। কারণ নাহলে ওরা আমাকে মেরেই ফেলত।”
এই ভিডিও বার্তার আগেই অবশ্য এক বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং ধীরেন্দ্রর সমর্থনে মুখ খুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালিয়েছিলেন ধীরেন্দ্র।
বৃহস্পতিবার বালিয়ার দুর্জনপুরে রেশনের দোকানের মালিকানা নিয়ে ডাকা একটি বৈঠকে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৈঠকে ধীরেন্দ্রর সঙ্গে বচসা শুরু হয় জয়প্রকাশ নামের এক যুবকের। ধীরেন্দ্র নিজে একজন বিজেপি কর্মী এবং বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংয়ের খুব কাছের লোক বলে পরিচিত। এছাড়া বিজেপির স্থানীয় ইউনিটের প্রাক্তন সভাপতিও ছিলেন ধীরেন্দ্র। এই বচসা চলাকালীনই নাকি ৪৬ বছরের জয়প্রকাশের উপর তিনটি গুলি চালান ধীরেন্দ্র। তারপরেই সেখানে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এই ঘটনায় পদপিষ্ট হয়েও অনেকের মৃত্যু হতে পারত বলেই তাঁদ্র আশঙ্কা।
এই ঘটনার পরে অবশ্য ধীরেন্দ্রর ভাই-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া আরও পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। ধীরেন্দ্র সিংয়ের এখনও খোঁজ মেলেনি। তাঁর খোঁজ দিতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করেছে পুলিশ।
গতকালের এই ঘটনায় অবশ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। তাই সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট সুরেশ চন্দ্র পাল ও সার্কেল অফিসার চন্দ্রকেশ সিংকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তার মধ্যেই এবার বিজেপি বিধায়কের দাবি ও অভিযুক্তের এই ভিডিও প্রকাশে ঘটনা আরও জটিল হল বলেই মনে করছে পুলিশ মহল।