
এদিনের বৈঠকে কেন্দ্র জানিয়েছে, এই কমিটিতে সব পক্ষের প্রতিনিধি থাকবেন। অর্থাৎ কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধিরা থাকবেন। এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বৈঠকে নাকি সরকারের তরফে বলা হয়েছে, কোনও একটা আইন প্রত্যাহার করা দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া। অল্প সময়ের মধ্যে তা করা যায় না। তাই আপাতত এই কমিটির প্রস্তাব দিয়েছে তারা। নতুন আনা তিনটি কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের যে সব ক্ষোভ রয়েছে তা নিয়ে এই কমিটি আলোচনা করে একটা সমাধান সূত্র বের করতে পারবে বলেই আশা প্রকাশ করেছে কেন্দ্র।
বুধবার কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, পীযূষ গয়াল এবং সোমপ্রকাশ। সোমপ্রকাশ এদিন বৈঠকের আগে বলেন, আশা করা হচ্ছে, আজই একটা হেস্তনেস্ত হয়ে যাবে। এর আগে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরও বলেছিলেন, আমরা আশা করি এবছরের শেষেই কৃষকবিক্ষোভ শান্ত হবে।
সোমপ্রকাশ এদিন বলেন, “আমরা চাই, কৃষকরা নিজেদের বাড়িতে, পরিবারের সঙ্গে নববর্ষের উৎসব করুন। আমরা তাঁদের সঙ্গে খোলা মনে আলোচনায় বসব। সরকার চায়, আন্দোলনকারীরা বাড়ি ফিরে যান। সেজন্য এই বিতর্কের সমাধান করা হবে।”
যদিও আন্দোলনরত কৃষকরা অত আশাবাদী নন। এদিন বৈঠকের আগে পাঞ্জাবের কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটির নেতা সুখবিন্দর সিং সাবরা বলেন, “এর আগে পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে। আমাদের মনে হয় না, আজকের বৈঠকেই সমাধানসূত্র বেরোবে। নতুন তিনটি কৃষি আইন অবশ্যই বাতিল করতে হবে।”
গত মঙ্গলবার ৪০ টি কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার তরফে জানানো হয়, সরকারের প্রস্তাব মেনে তারা আলোচনায় বসতে রাজি। তবে তারা আইন প্রত্যাহারের দাবি থেকে কোনওভাবেই সরে আসতে রাজি নয়। গত সপ্তাহে মোর্চা সরকারের প্রস্তাব বাতিল করে দেয়। কৃষক নেতারা বলেন, “সরকার আমাদের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে না। আইন প্রত্যাহারের কথা আলোচ্যসূচিতে থাকা উচিত।” আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রক কৃষকদের উদ্দেশে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল। কৃষক নেতারা সেই চিঠিতে গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁরা বলেন, “সরকার কি আমাদের দাবির কথা জানে না?”
গত শুক্রবার কৃষি আইন নিয়ে বিরোধীদের অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জোর দিয়ে বলেন, নতুন আইনে কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়া হবে না। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীরা মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। শুক্রবারই মোদী প্রধানমন্ত্রী কিষাণ প্রকল্পে ১৮ হাজার কোটি টাকা দেন।
এর মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং কৃষকদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, এক বছরের জন্য নতুন আইনগুলি চালু হোক। তারপরে যদি কৃষকদের মনে হয় তাঁদের ক্ষতি হচ্ছে তাহলে আইনে সংশোধনী আনতে তৈরি সরকার।
এখন দেখার এই কমিটি গড়ার প্রস্তাব নিয়ে কৃষকদের তরফে কী জবাব দেওয়া হয়।