
বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিনে যে পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে সেটাই কি দেশের কোভিডের সঠিক ছবি। কারণ একটা সময় মনে হচ্ছিল মোট আক্রান্তের সংখ্যায় আমেরিকাকেও টপকে যাবে ভারত। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যেখানে আমেরিকায় ফের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে সেখানে ভারতে তা অনেকটাই কমেছে। তাই ভারত করোনা সংক্রমণ কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, তার থেকেও প্রশ্ন উঠছে কোভিড টেস্টের কিটের মান নিয়ে।
ভারতে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে দেশে। কিন্তু তাও তা বিশ্বের বেশ কিছু দেশের থেকে কম। বিশেষ করে আরটি-পিসিআর টেস্টের থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের সংখ্যা বাড়ছে। এই টেস্টে ভুল রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা প্রায় ৫০ শতাংশ বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
শীতের মরসুম পড়ে গিয়েছে। তার মধ্যে সদ্যই উৎসবের মরসুম শেষ হয়েছে। তাই এই সময়ে দেশে সংক্রমণ বাড়ার কথা। দেশে করোনা সংক্রমণের নতুন ওয়েভের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেখানে সংখ্যা কমছে। বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ বলছেন, এই ছবি সত্যি নয়। প্রতিদিন যে আক্রান্তের সংখ্যা দেখা যাচ্ছে তার থেকে অনেক বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।
প্রগ্রেসিভ মেডিকজ অ্যান্ড সায়েন্টিস্টস ফোরামের প্রেসিডেন্ট হরজিত সিং ভাট্টি জানিয়েছেন, “র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার ফলে অনেকেই চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাই আগামী দিনে ছবিটা আরও বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে।”
এই মুহূর্তে ভারতে মোট যে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে তার প্রায় ৪৯ শতাংশ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। অগস্টে সেই সংখ্যাটা ছিল ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। আর এই র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট যত বেড়েছে ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা তত কমেছে। এখনও ভারতের বেশ কিছু রাজ্য প্রতিদিন বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছে না বলেও দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আর তার ফলেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে সমস্যা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো বেশি আক্রান্তের দেশগুলি শুধুমাত্র আরটি পিসিআর টেস্টের উপরেই ভরসা করছে। কারণ এই টেস্টের মাধ্যমেই সঠিক ছবিটা বোঝা যায়। ফলে চিকিৎসা করতে সুবিধা হয়। র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে শুধুমাত্র কোথায় সংক্রমণ খুব বেশি বেড়েছে সেটা বোঝা সম্ভব হয়। আক্রান্তের সংখ্যা বোঝার জন্য দরকার আরটি পিসিআর টেস্ট। তাই যতদিন না সেটা বেশি করা হবে ততদিন আসল ছবিটা ধরা পড়বে না বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।