
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনার ভয়ঙ্কর রূপ দেখে মৃত্যুভয়ে কাঁপছে দেশ। গণচিতা চলছে দিল্লিতে। কবরস্থান ভরে উঠেছে। এদিকে কুম্ভমেলায় কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। গঙ্গায় পাশাপাশি, গা ঘেঁষাঘেঁষি করে শাহিস্নান সেরেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। মুখে মাস্ক নেই, পারস্পরিক দূরত্বের বালাই নেই। প্রশাসনের কোভিড বিধি উড়িয়ে কুম্ভমেলায় এ বছর ৭০ লাখের বেশি মানুষের জমায়েত হয়েছিল। তার মধ্যে কোভিড আক্রান্ত আড়াই হাজারের বেশি।
প্রতি ১২ বছর অন্তর কুম্ভমেলা হয়। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী শাহি স্নানের জন্য আসেন হরিদ্বারে। কিন্তু এ বছরটা ছিল ব্যতিক্রম। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশে। ভাইরাসের বিদেশি প্রজাতিগুলির পাশাপাশি দেশেও ডবল, ট্রিপল মিউট্যান্ট প্রজাতি ছড়িয়ে পড়েছে। বিজ্ঞানীরাই বলছেন, ভাইরাসের এই নতুন প্রজাতি সুপার-স্প্রেডার, মানে আরও বেশি ছোঁয়াচে। এমন পরিস্থিতিতে মেলামেশা, ভিড়-জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সংক্রমণের ধাক্কা সামলাতে রাজ্যে রাজ্যে আংশিক লকডাউন চালু করা হচ্ছে। সেই অবস্থাতেও কুম্ভমেলায় জমায়েত আটকানো যায়নি। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী সামাজিক দূরত্ব অগ্রাহ্য করে, মাস্ক না পরে ঘেঁষাঘেষি ভাবে গঙ্গার তীরে হাজির হয়েছেন। তাঁরা আবার দাবিও করেছিলেন, কোভিড নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন নন। কারণ উত্তরাখণ্ডে ঢুকতে হলে পুণ্যার্থীদের কোভিড নেগেটিভ হতেই হবে বলে নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য সরকার।
কিন্তু আদতে দেখা গেছে, কোভিড বিধি না মেনে এত মানুষের জমায়েত থেকেই সংক্রমণ আরও দ্রুত একে অপরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এপ্রিলের ১২, ১৪ ও ২৭ তারিখে শাহিস্নান ছিল। এরপরে অন্তত ২ লক্ষ পুণ্যার্থীর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। তাতে কোভিড পজিটিভ রোগী ধরা পড়ে ২৬০০ জনের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংক্রমিতদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন তাঁদের সকলকে চিহ্নিত করা যায়নি। সেই হিসেব ধরলে সংক্রমণ আরও বেশি জনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হরিদ্বারের চিফ মেডিক্যাল অফিসার এস কে ঝা বলছেন, এ বছর কোভিড নির্দেশিকা না মেনেই গঙ্গার ঘাটে পু্ণ্যার্থীরা ভিড় করেছিলেন। সেই ভিড় সামলাতে নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে পুলিশকে। কুম্ভমেলার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল অফিসার অর্জুন সিং বলেছেন, গঙ্গার সমস্ত ঘাটে কোভিড বিধি মেনে চলার নির্দেশিকা জারি করেছিল প্রশাসন। কিন্তু পুণ্যার্থীদের অনেকেই বলছেন, বাস্তবে এটা সম্ভব নয়। মেলায় এসে আক্রান্ত হওয়ার জেরে কত জনের মৃত্যু হয়েছে সেই হিসেবও প্রশাসনের কাছে নেই।