
২৪ ঘণ্টা পর উঠল প্রেসিডেন্সির অবস্থান বিক্ষোভ, আন্দোলন চলবে দাবি পড়ুয়াদের
বিক্ষোভকারীরা জানান, সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে অবস্থান তুলেছেন তাঁরা। কিন্তু একে যেন তাঁদের দুর্বলতা না ভাবা হয়। নিজেদের দাবিদাওয়া আদায়ের রাস্তা থেকে সরছেন না তাঁরা। দাবি না মেটা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অবশেষে ২৪ ঘণ্টা পর অবরোধ উঠল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ওঠে শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবেই বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেছেন তাঁরা। যদিও দাবি-দাওয়া না মেটা পর্যন্ত তাঁদের বিক্ষোভ চলবে বলেই জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
হিন্দু হস্টেলের সংস্কার-সহ একাধিক দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ বিক্ষোভ শুরু করেন প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা। কলেজ স্ট্রিটে চার মাথার মোড়ে অবস্থানে বসে পড়েন তাঁরা। সঙ্গে ছিল পোস্টার, ব্যানার। স্লোগান উঠছিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই অবস্থানের প্রভাব পড়ে যান চলাচলে। বন্ধ হয়ে যায় উত্তর কলকাতা-সহ হাওড়া ও শিয়ালদহগামী যান চলাচল। চরম ভোগান্তির স্বীকার হন যাত্রীরা। এই রাস্তায় চলাচল করা গাড়ির মুখ ঘুরিয়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। অনেকে তো হেঁটেই গন্তব্যে যাওয়া শুরু করেন।
শুক্রবার সকাল থেকেও এই বিক্ষোভ চলতে থাকে। পুলিশ গিয়ে বারবার বিক্ষোভকারীদের উঠতে বললেও তাঁরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে চাননি। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, যতক্ষণ না তাঁদের দাবিদাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেনে নিচ্ছে ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। শুক্রবার সকাল থেকেও যান চলাচল বন্ধ থাকে ওই রাস্তায়। ফলে কাজের দিনে ফের দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।
বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার আবেদন জানান। কিন্তু নিজেদের দাবিদে অনড় থাকেন পড়ুয়ারা। ফলে দু’দলের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না যায়, তার জন্য আসরে নামতে হয় পুলিশকে। পড়ুয়াদের পুলিশ বোঝানোর চেষ্টা করে, শুধু যাতায়াত নয়, এই বিক্ষোভের ফলে বইপাড়ার ব্যবসার উপরেও প্রভাব পড়ছে। নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য অন্য মানুষের পেটে লাথি মারা উচিত নয়।
অবশেষে শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ অবস্থান তুলে নেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা জানান, সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে অবস্থান তুলেছেন তাঁরা। কিন্তু একে যেন তাঁদের দুর্বলতা না ভাবা হয়। নিজেদের দাবিদাওয়া আদায়ের রাস্তা থেকে সরছেন না তাঁরা। দাবি না মেটা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।
পড়ুয়াদের দাবি, হিন্দু হস্টেলের তিন, চার ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। সেইসঙ্গে হস্টেলের রান্নার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কেন বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা। হিন্দু হস্টেল আন্দোলনে ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে কেন বাধা দেওয়া হল, যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে পদ থেকে অপসারণ কেন করা হচ্ছে না, হস্টেল আবাসিকদের নিয়ে ওয়েলফেয়ার কমিটি কেন গঠন হচ্ছে না, এইসব দাবি পড়ুয়াদের। তাঁদের অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে বাধ্য হয়েই অবস্থান শুরু করেছেন তাঁরা।