
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দক্ষিণেশ্বরকে বদলে ফেলেছে স্কাইওয়াক। এবার কালীঘাটে শুরু হল স্কাইওয়াক তৈরির কাজ। কালীঘাট থানার পিছনে বড় গর্ত করে মাটি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আনা হয়েছে অত্যাধুনিক হাইড্রোলিক মেশিন। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড থেকে কালী টেম্পল রোড ধরে প্রায় ৪৫০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার চওড়া এই স্কাইওয়াক কালীঘাট মন্দিরে গিয়ে নামবে। স্কাইওয়াকের একটা লেন কালীঘাট থানা থেকে ডান দিকে গুরুপদ হালদার রোডের দিকে নামবে। বেশ কয়েকটি গেট থাকবে। থাকবে মোট চারটি এসক্যালেটর।
কালীঘাট থানার তরফে পুরসভাকে প্রায় ৩৫০ হকারের নাম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত হকারকে স্কাইওয়াকে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পুর আধিকারিকেরা। তবে সব দোকানদারকেই উঠে যেতে হবে। যেকারণে স্কাইওয়াক হোক চাননা অনেকেই। পুজোর সরঞ্জামের দোকানদার জিতু নস্কর বললেন, ‘আমাদের পেটে লাথি মারা হল। আমরা কোথায় যাব? এই ঘিঞ্জি জায়গায় স্কাইওয়াকের কোনও দরকার ছিল না। এখান থেকে তুলে দেওয়া হবে আমাদের। স্কাইওয়াকে স্টল দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি চিন্তায় আছি। এত দোকান স্কাইওয়াকের নিচ্ছে জায়গা হবে না।’
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় ৩৫০ হকারকে নতুন করে জায়গা করে দেওয়া হবে। স্কাইওয়াকের ওপর যে বাজার তৈরি হবে, সেখানেই প্রত্যেক দোকানিকে বসার জায়গা করে দেওয়া হবে। ১৮ মাসের মধ্যে মন্দিরের সংস্কার ও স্কাইওয়্যাক তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে।
এতে অখুশি দোকানদারদের একাংশ। অভিজিৎ চক্রবর্তী বললেন, ‘আমাদের মুখচেনা খদ্দের। স্কাইওয়াকে স্টলে তাঁরা আর আসবে না। দোকানের পজিশনটা একটা ব্যাপার। যাদের হাজরা পার্কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা মাছি তাড়াচ্ছে। দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াকে বহু হকার জায়গা পায়নি। আমাদেরও সেই পরিস্থিতি হবে।’
এখন মন্দির খোলা রয়েছে। মাস্ক পরে দর্শনার্থীরা আসছেন। তারমধ্যেই মন্দির চত্বরের বিভিন্ন অংশে সংস্কারের কাজ চলছে। তৈরি করা হয়েছে বহু দোকানঘর। সেগুলি ভাগ করে দেওয়া হবে মন্দির চত্বর সংলগ্ন হকারদের মধ্যে। কালীঘাট মন্দির লাগোয়া দোকানিদের সরিয়ে পার্শ্ববর্তী চাতালেই ঠিকানা করে দেওয়া হয়েছে। এবার প্রবেশপথের হকার্স কর্নার ও ফুটপাতের হকারই পুরসভা ও প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ।
এক মহিলা চায়ের দোকানি বললেন, ‘সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে। সাজানোর ঠ্যালায় মন্দিরের কাছের বটগাছটাও কাটা পড়বে বোধহয়। দক্ষিণেশ্বরে অনেক জায়গা ছিল। এখানে সেই জায়গা কই।’
কালীঘাটের সেবাইতদের একজন তারক রায় জানালেন, পাণ্ডা এবং তাঁদের কাজও ওলটপালট হয়ে যাবে। পুজো দিতে লোকজন কোথা দিয়ে ঢুকবেন–বেরোবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না তাঁরা।
আগামী বছর মে মাস নাগাদ স্কাইওয়াকের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হবে না বলে মনে করছে মন্দির চত্বরের বাসিন্দারা। ধীরেন ঘোষ বললেন, ‘পাশেই আমার বাড়ি। অনেক পুরনো। একদম গা ঘেঁষে স্কাইওয়াক যাবে। বাড়ির ক্ষতি হবে কীনা কে জানে।’