
কয়েকদিন আগে কর্ণাটকের কালবুর্গি জেলায় প্যাঁচা সমেত ছয় চোরাশিকারি ধরা পড়ে। তাদের জেরা করে জানা যায়, প্রার্থীরা ভোটের আগে প্রতিটি প্যাঁচার দাম দিচ্ছেন তিন-চার লক্ষ টাকা।
যে প্যাঁচাগুলি চোরাশিকারিদের থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের নাম ইন্ডিয়ান ইগল আউল। দক্ষিণ ভারতে তার নাম কোমবিনা গুবে। অনেকের ধারণা, এই পাখির সাহায্যে শত্রু নিপাত করা যায়। অনেক সময় এই পাখির ঠোঁট, খুলি, অন্যান্য হাড়, রক্ত এবং মাংস দিয়ে শত্রুকে জব্দ করার চেষ্টা হয়।
অনেকে বিশ্বাস করেন, দেওয়ালির সময় প্যাঁচা বলি দিলে বিপুল ধনসম্পদ লাভ হয়। কারণ প্যাঁচা মা লক্ষ্মীর বাহন। তাকে বধ করলে দেবী আর বাড়ি থেকে যেতে পারেন না। সারা বছর গৃহে অচলা হয়ে থাকেন।
ভারতে প্যাঁচা মারা আইনত নিষিদ্ধ। বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে ওই প্রাণিটিকে শিকার করা, বিক্রি করা ও অন্য কোনওভাবে কাজে লাগানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভারতে মোট ৩০ টি প্রজাতির প্যাঁচা পাওয়া যায়। তার মধ্যে ১২ টি প্রজাতির চাহিদা আছে বাজারে। বড় আকৃতির, লম্বা পালকযুক্ত প্যাঁচার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কারণ ধরে নেওয়া হয়, ওই ধরণের প্যাঁচাগুলির সাহায্যে শত্রুর ক্ষতি করা যায় বেশি।
রাজনীতিকরাও এই ধরনের বিশ্বাস থেকে মুক্ত নন। একসময় জানা গিয়েছিল, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে সি চন্দ্রশেখর রাও নিয়মিত যজ্ঞ করেন। তাতে খুব জাঁকজমক হয়। তিনি বাস্তুশাস্ত্রও মানেন। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা সুর্যাপেট বিধানসভার প্রার্থী রামরেড্ডি দামোদর রেড্ডি মনে করেন, চামড়ার ব্যাগ নিয়ে কোনও কাজে বেরলে তিনি সফল হন। কিন্তু সেই ব্যাগে টাকা থাকে না। বই, পেন, কয়েকটি ওষুধ ও জলের বোতল রাখেন। পচারাম শ্রীনিবাস রেড্ডি নামে এক রাজনীতিক বিশ্বাস করেন, অ্যাম্বাসাডর গাড়িতে চড়ে ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তিনি জিতবেনই।
কোন রাজনীতিকরা প্যাঁচার সাহায্যে শত্রুকে ভোটে হারাতে চাইছেন এখনও জানা যায়নি। তবে একটি সূত্রে খবর, প্রায় সব দলেরই বেশ কয়েকজন রাজনীতিক মন্ত্রশক্তিতে বিশ্বাস করেন। তাঁরা পছন্দমতো প্যাঁচা পাওয়ার জন্য চড়া দাম দিতে রাজি। সেই সুযোগে রমরমা হয়েছে চোরাশিকারিদেরও।