
মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিসগড়ের মতো রাজ্যে বিজেপি যেখানে সরকারবিরোধী হাওয়ায় টালমাটাল সেখানে তেলঙ্গানায় একক গরিষ্ঠতা পেয়েছেন চন্দ্রশেখর রাও। কেমন করে তা সম্ভব হল?
মঙ্গলবার পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল বেরনোর পরে অনেকেই মাথা ঘামাচ্ছেন এই প্রশ্নটি নিয়ে। তাঁদের মতে, এর পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ। তার মধ্যে অন্যতম হল, মুসলিম ভোট নিজের পক্ষে টানতে পারা। টিআরএসকে বিজেপির অঘোষিত মিত্র ধরা হয়। তার পরেও চন্দ্রশেখর কীভাবে মুসলিম ভোট টানতে পারলেন?
পর্যবেক্ষকরা বলছে, টিআরএসের অনেকাংশে সুবিধা করে দিয়েছে এআইএমএম। তারা প্রার্থী দিয়েছিল মাত্র আটটি আসনে। বাকি ১১ টি মুসলিম অধ্যুষিত আসনে টিআরএসের হয়ে প্রচার করেছে।
চন্দ্রশেখর রাও নিজে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে গিয়ে ভাষণ দিয়েছেন উর্দুতে। মসজিদের ইমামদের সাম্মানিক বৃত্তি বাড়িয়ে দেবেন বলেছেন। এআইএমএমের সঙ্গে তাঁর দলের ঘনিষ্ঠতার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন ভোটারদের। সেই সঙ্গে সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ভোটারদের বারে বারে বলেছেন, তাঁর সঙ্গে বিজেপির কোনও সমঝোতা নেই।
গত পাঁচ বছরে মুসলিমদের খুশি করার জন্য কয়েকটি প্রকল্পও চালু করেছেন চন্দ্রশেখর। তার মধ্যে আছে শাদি মুবারক প্রকল্প। সংখ্যালঘুদের জন্য বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বানিয়ে দিয়েছেন।
তেলঙ্গানার মোট জনসংখ্যার ১২.৭ শতাংশ মুসলিম। তাঁরা অন্তত ৪৫ টি কেন্দ্রে ফ্যাক্টর। অন্তত ২৯টি কেন্দ্রে মুসলিম ভোটার আছেন মোট ভোটদাতার ১৫ শতাংশ। ১৩ টি কেন্দ্রে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। যে কেন্দ্রগুলিতে মুসলিমদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে আছে হায়দরাবাদ, আদিলাবাদ, করিমনগর, নিজামাবাদ, মেডাক, মেহবুবনগর এবং সেকেন্দ্রাবাদ। পুরানো হায়দরাবাদে ছ’টি কেন্দ্রে লড়াই করেছে এআইএমএম। সেকেন্দ্রাবাদে একটি এবং রাজেন্দ্রনগরে একটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
তেলঙ্গানা রাজ্যের জন্ম ২০১৪ সালে। এটি দেশের নবীনতম রাজ্য। ২০১৪ সালে অন্ধ্রের সঙ্গে এখানে ভোট হয়েছিল। এই প্রথমবার আলাদা করে সেখানে ভোট হচ্ছে। গত ৭ নভেম্বর রাজ্যের ১১৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। কথা ছিল, ২০১৯ সালের এপ্রিল-মে মাস নাগাদ লোকসভা ভোটের সঙ্গে তেলঙ্গানায় বিধানসভা ভোট হবে। কিন্তু চন্দ্রশেখর রাও আগেই বিধানসভা ভেঙে দেন। সেজন্য রাজ্যে ভোট হয়েছে কয়েকমাস আগে।