
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চার মাসের গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে যুবককে বাই নিয়ে ছুটতে হল তিন তিনটে হাসপাতালে। একটানা রক্তপাত হচ্ছিল শান্তিদেবীর। ঝাড়খণ্ডের চাতুয়াগ গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। বুধবারই হঠাৎ তাঁর রক্তপাত শুরু হয়। অভিযোগ বারবার ১০৮ এ ডায়াল করেও কোনও অ্যাম্বুলেন্স পাননি তাঁরা। জানাচ্ছেন শান্তিদেবীর স্বামী কমল গঞ্জু।
রবিবার থেকেই শান্তিদেবীর জ্বর হয়েছিল। এর সাথে ব্লিডিং শুরু হওয়ায় তাঁরা খুবই বিপাকে পড়েন। অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে স্ত্রীকে বাইকে চাপিয়ে প্রথমে তিনি পৌঁছে যান একটি কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারে, সেখানে তাঁর কোনও চিকিৎসা তো পানইনি, সঙ্গে কোনও অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যায়নি।
এখানেই শেষ নয়, স্ত্রীকে নিয়ে আরও ১০ কিলোমিটার পেরিয়ে বাইকেই কমল পৌঁছে যান লাতেহার সর্দার হাসপাতালে। না, এবারও চিকিৎসা পাননি শান্তিদেবী। সেখানে তাঁর ক্রিটিকাল অবস্থা দেখে তাঁকে ডাক্তাররা রাজেন্দ্র ইন্স্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে (RIMS) রেফার করে দেন। এই হাসপাতালটি আবার রাঁচিতে। বাইকে করে সেখানে পৌঁছে, অবশেষে তাঁকে ভর্তি করা যায় এবং চিকিৎসা শুরু হয়। তাঁর এই পুরো সফরটাই হয় দু’চাকার বাইকে!
বারবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে অন্য জায়গায় পাঠানো হচ্ছিল কেন? রক্তের অভাব ছিল সেই হাসপাতালগুলোয়। শান্তিদেবীর এই হয়রানির বিষয়টা সামনে আসতেই ঝাড়খণ্ডের ডিসট্রিক্ট সিভিল সার্জেন শিবপূজন শর্মা বলছেন, “আমাদের হাসপাতালে তাঁর গ্রুপের রক্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে ছিল না। তাঁর হিমোগ্লোবিন কাউন্টও কমে গেছিল অনেকটা, তাই দেরি না করে তাঁকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিই আমরা। তাছাড়া যেভাবে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটা ঠিক নয়। গ্রাম থেকে অ্যাম্বুলেন্স আসতে অন্তত ৪০ মিনিট সময় তো লাগেই। বলার পরে অপেক্ষা তো করতেই হবে। এখন শান্তিদেবী ভালোই আছেন RIMS এ। ”
যে দেশে রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সের পথ আটকালে ১০ হাজার টাকার জরিমানার আইনের করা হচ্ছে, সে দেশেই অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে, রক্তের অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার রোগীকে চিকিৎসা পেতে ছুটতে হচ্ছে।
সত্য সেলুকাস…