
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অনলাইন ক্লাসে পড়াশোনার চাপ নিতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে ১২ বছরের কিশোরী। গুজরাতের ঘটেছে এমন মর্মান্তিক ঘটনা। মৃত কিশোরীর পরিবার জানিয়েছে, অনলাইন ক্লাসের পড়াশোনা, হোমটাস্ক, সবকিছুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে পারছিল না সে। কয়েকদিন ধরেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল ওই কিশোরী। তবে সে যে এত বড় সিদ্ধান্ত নেবে সেটা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি বাড়ির কেউ। পুলিশ জানিয়েছে মৃত কিশোরীর নাম খুশি। সদ্যই ক্লাস এইটে উঠেছিল সে।
পুলিশ জানিয়েছে, বাবা-মা এবং ছোট ভাইয়ের সঙ্গে থাকত খুশি। লকডাউনের আগে ভর্তি হয়েছিল একটি গুজরাতি মিডিয়াম স্কুলে। সেখানকার অনলাইন ক্লাসের জন্য মেয়েকে স্মার্টফোন কিনে দিয়েছিলেন খুশির বাবা। সামান্য অটো গ্যারাজের মেকানিকের পক্ষে মেয়েকে স্মার্টফোন কিনে দেওয়া সত্যিই ছিল সাধ্যের অতীত। তবে মেয়ের পড়াশোনার কোনও ক্ষতি হোক সেটা চাননি খুশির বাবা। তাই বেশ কষ্ট করে হলেও কিনে ফেলেছিলেন স্মার্টফোন, যাতে মেয়ে ঠিক ভাবে অনলাইন ক্লাস পড়াশোনা করতে পারে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, টাকাপয়সার এতই টানাটানি ছিল ওদের সংসারে যে বিদ্যুতের বিল জমা দিতে পারেননি খুশির বাবা।
কিন্তু সেই অনলাইন ক্লাসই কাল হল খুশির জীবনে। কিশোরীর মা জানিয়েছেন, সোমবার সকলেই মেয়েকে তিনি বলেছিলেন যাতে অনলাইন ক্লাস শেষ হলে সব পড়া তৈরি করে নেয়। কিন্তু কিছুতেই পড়তে চায়নি খুশি। বাহানা দিয়ে একটা ঘরে ঢুকে নিজেকে বন্ধ করে নেয় সে। খানিকক্ষণ পরেও খুশি না বেরোনোয় সন্দেহ হয় কিশোরীর মায়ের। তারপর ওই ঘর থেকে উদ্ধার হয় খুশির ঝুলন্ত দেহ।
গত মার্চ মাস থেকে লকডাউন চালু হয়েছিল দেশে। তখন থেকেই বন্ধ রয়েছে স্কুল। ছাত্রছাত্রীদের যাতে পড়াশোনায় ক্ষতি না হয় সেজন্য অনলাইন ক্লাসের প্রস্তাব আনা হয়। চালু হয় অনলাইন ক্লাস। এর আগে কেরল এবং পাঞ্জাবে আত্মঘাতী হয়েছিল দুই কিশোরী। তবে তাদের ক্ষেত্রে কারণ ছিল উল্টো। স্মার্টফোন না থাকায় তারা অনলাইন ক্লাস করতে পারেনি। সেজন্য আত্মহত্যা করেছিল ওই দুই কিশোরী। দু’জনের ক্ষেত্রেই নিম্নবিত্ত পরিবার হওয়ায় স্মার্টফোন ছিল বিলাসিতা। অনেক চেষ্টা করেও পরিবারের লোকেরা তাদের মেয়েকে স্মার্টফোন কিনে দিতে পারেনি। তবে এবারের ঘটনা একেবারেই অন্যরকম। অনলাইন ক্লাসের চাপের কারণেই গুজরাতের ১২ বছরের খুশি আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।